বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৮৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থাটির নিহতদের তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি করা পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
১২টি জাতীয় দৈনিক ছাড়াও এইচআরএসএসের তথ্য অনুসন্ধানী ইউনিট ও সারা দেশ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের বিষয়ে পর্যালোচনা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে এইচআরএসএস। এতে বলা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানে এখন পর্যন্ত ৮৭৫ জনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থাটি। এর মধ্যে ৭৪৩ জনের নাম জানা গেলেও ১৩২ জনের নাম জানা সম্ভব হয়নি।
তবে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে এক হাজার হবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী, সাংবাদিক, পেশাজীবী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়াও শিশু ও নারীসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থক রয়েছেন। এর মধ্যে আন্দোলনে কমপক্ষে ১০৭ জন শিশু, ৬ জন সাংবাদিক ছাড়াও ৫১ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং ১৩ জন শিশু ও নারী নিহত হয়েছেন।
এইচআরএসএস জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা ৭২ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে শিক্ষার্থী ১৮৪ (৫২ শতাংশ) জন, শ্রমজীবী ৭০ (২০ শতাংশ) জন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ৫১ (৫ শতাংশ) জন ছাড়াও সাংবাদিক রয়েছেন ৬ জন এবং অন্যান্য পেশার মানুষ রয়েছেন ৪১ (১২ শতাংশ) জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানে ঘটে যাওয়া বিপ্লবে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত বাহিনী বা গোষ্ঠীর বিষয়ে ৫৪১ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, শুধুমাত্র পুলিশের হামলায় ৪১৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ৪৫ জন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে ৪৪ জন ও গণপিটুনিতে ৩৩ জন নিহত হয়েছেন।
নিহতদের সংখ্যা বিবেচনায় এইচআরএসএসের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, নিহত ৮৭৫ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৫৪০ জন। পাশাপাশি চট্টগ্রামে ৯১ জন, খুলনায় ৮১ জন, রাজশাহীতে ৬৪ জন, ময়মনসিংহে ৩৮ জন, রংপুরে ২৯ জন, সিলেটে ২০ জন এবং বরিশালে ১৩ জন নিহত হয়েছেন।