পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র নাজমুল আকনকে (২৩) অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে জোর করে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে এক তরুণীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নাজমুল বাদী হয়ে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন।
মামলায় ইশরাত জাহান পাখি (২৫) নামের ওই তরুণীসহ অজ্ঞাতপরিচয় ছয় থেকে সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি গ্রহণ করে পটুয়াখালী সদর থানাকে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে নাজমুলকে জোর করে বিয়ে করার একটি ভিডিও চিত্র আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একটি কক্ষে এক নারীর (ইশরাত জাহান পাখি) বাম পাশে নাজমুল বসে আছেন। পেছন থেকে নাজমুলের মাথার দুইদিক থেকে এক ব্যক্তি ধরে রেখেছে। সেখানে আরও কয়েকজনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এ সময় ওই নারীকে নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে দেখা গেছে। স্বাক্ষর গ্রহণের পর নাজমুলকে মিষ্টি খাইয়ে দিলে নাজমুল তা মুখ থেকে ফেলে দেন।
মামলা দায়েরের পর গত শুক্রবার দুপুর থেকে ওই নারী নিজেকে নাজমুলের স্ত্রী দাবি করে নাজমুলের বাবার বাড়ি মির্জাগঞ্জে অবস্থান করছেন। এ ঘটনায় মির্জাগঞ্জ এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে।
নাজমুল মির্জাগঞ্জ উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের জালাল আকনের ছেলে। অভিযুক্ত ইশরাত জাহান পাখি একই উপজেলার গাজিপুর সাকিনের মো. আউয়ালের মেয়ে।
নাজমুলের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান জানান, নাজমুল পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের নিয়মিত ছাত্র। তিনি কলেজের আবাসিক হোস্টেলে থাকেন। আসামি ইশরাত জাহান পাখি দীর্ঘদিন ধরে নাজমুলকে মোবাইল ফোনে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিয়ের প্রলোভন দেখান। কিন্তু নাজমুল রাজি না হওয়ায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকা থেকে নাজমুলকে অপহরণ করা হয়। পরদিন অজ্ঞাত একটি স্থানে নিয়ে সাত থেকে আটজন ব্যক্তি তাকে বলপূর্বক তাকে একটি নীল কাগজে সই করতে বাধ্য করেন। পরে তাকে ওইদিনই শহরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এ দিয়ে তারা একটি কাবিননামা তৈরির পাঁয়তারা করছেন।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় গত ৩ অক্টোবর আমরা আদালতে মামলা করেছি। মামলাটি নথিভুক্ত করতে আদালত থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নারী ইশরাত জাহান পাখি দাবি করেন, নাজমুলের সাথে তার দুই বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে নিজ ইচ্ছায় তাকে বিয়ে করেছেন। অপহরণ কিংবা জোরপূর্বক বিয়ে করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান জানান, আদালতের নির্দেশে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।