নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক মাদরাসাছাত্রকে (১১) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই মাদরাসার বাবুর্চিসহ পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় মাদরাসার একজন বাবুর্চি ও হাফেজ বিভাগের ছয় শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রের বাবা। এদিকে ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য চাপ দিচ্ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার হাইজদি ইউনিয়নের কলাগাছিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা কলাগাছিয়া হজরত আবুবকর সিদ্দিক (রা.) মাদরাসা ও এতিমখানায় পড়ে।
অভিযুক্তরা হলেন মাদরাসার বাবুর্চি এনায়েত (২২), হাফেজ বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান (১৮), রিয়াদ (২১), হাসান (২২), জাবের (১৮) ও আনিস (২২)। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্তরা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী শিশুসহ আরও দুজনকে তুলে মাদরাসার নির্জন ধর্ষণের চেষ্টার করেন। পরে ঘটনা জানেন বাবুর্চি এনায়েত।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে মাদরাসার অধিকাংশ মানুষ গোসলে ব্যস্ত থাকার সুযোগে বাবুর্চি এনায়েতসহ পাঁচ শিক্ষার্থী মিলে ভুক্তভোগী শিশুকে একটি কক্ষে আটক করে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে এনায়েত, ইমরান ও হাসান খুন্তি গরম করে শিশুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেন। এমনকি এই ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যান তারা।
ভুক্তভোগী শিশুর মা বলেন, ‘শনিবার বিকেলে মাদরাসায় রুমে গিয়া দেখি, পোলারে মাইরা শ্যাষ কইরা ফালাইছে। হুজুরগো কাছে বিচার দিলাম, উনারা কয়, আমরা কিছু জানি না। এগুলো দেখতে হইব জানলে জীবনেও মাদরাসায় দিতাম না।’
শিশুটির মা বলেন, ‘এলাকার সাখাওয়াত মেম্বার কইতাছে, মামলা না কইরা আপস কইরা ফালাইতে।’
মাদরাসার প্রিন্সিপাল জাহাঙ্গীর ইকবাল বলেন, ‘মাদরাসার ভেতরে গ্রুপিংয়ের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। যারা মারধর করেছে তাদের শাস্তি ও বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
হাইজদী ইউপির সদস্য সাখাওয়াত বলেন, ‘ছেলেরা নিজেদের ভুল-বোঝাবুঝিতে মারামারি করেছে, তাই বলেছিলাম মীমাংসা করতে।’
থানার ওসি আজিজুল হক হাওলাদার বলেন, ‘শিশুটির পরিবারকে আমরা বলেছি, আরেকবার থানায় এসে মামলা করে যেতে, আমরা মামলা গ্রহণ করব।’