ছাত্রকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় হেফজখানায় পড়ুয়া দশ বছর বয়সী এক ছাত্রকে বেত্রাঘাত করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মাওলানা আহমদ শফি নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মাইজ পাড়াস্থ ছদাহা আয়েশা ট্রাস্ট মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। 

শনিবার সকালে ওই ছাত্রকে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় নির্যাতিত ছাত্রের মা থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ওই ছাত্রের মা বলেন, এক মাস ২৮ দিন আগে আমার ছেলেকে আয়েশা ট্রাস্ট হেফজ করার জন্য দিয়েছিলাম। এর আগে ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়া লেখা করেছে। হুজুর আহমদ শফি ঘটনার কয়েকদিন আগে মাদরাসার গেইট দেওয়ার জন্য আমার কাছ থেকে দুই লাখ দাবি করেন। তখন আমি বলি, ছেলের বাবা বিদেশ থাকে। সম্প্রতি আমার একটা মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। ছেলের হেফজ শেষ হলে সামর্থ্যে যা পারি তা মাদরাসাকে সহায়তা করব।

তিনি আরও বলেন, মাদরাসাটি আমার পাড়ার মধ্যে অবস্থিত। প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ছেলে ছুটিতে বাড়ি আসে। গত বৃহস্পতিবার বাড়ি না আসায় হুজুরকে ফোন দিলে তিনি আমাকে বলেন, ছেলের পড়া শেষ করতে পারেনি। তাই এ সপ্তাহে সে বাড়ি যাবে না। পরে ওই বিকাল বেলা মাদরাসার দেওয়াল টপকিয়ে ছেলে বাড়িতে পালিয়ে আসে। তখন দেখি তার সারা শরীরে বেত দিয়ে নির্দয়ভাবে পেটানো হয়েছে। নির্যাতিত ছাত্রের মায়ের দাবি, হুজুরের দাবি করা দুই লাখ টাকা না দেওয়ায় ছেলেকে এভাবে পিটিয়েছে হুজুর।

ওই ছাত্রের মা জানান, সাতকানিয়া হাসপাতালে চিকিৎসারত ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছেন। এ ঘটনায় তিনি থানায় হুজুরের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে মামলা করবেন বলেও জানান।

অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছদাহা আয়েশা ট্রাস্ট মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আহমদ শফি মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ছেলেটি পড়া-লেখায় অমনোযোগী ও ফাঁকি দেয়। তাই শাসন একটু বেশি হয়েছে। এ ব্যাপারে কয়েকজন ইউপি সদস্য মাদরাসার অফিসে বসে বিষয়টি সমাধান করেছি এবং ছেলেটির মায়ের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছি। তবুও পাড়ার লোকজন এসে আমাকে মারধর করেছে। টাকা চাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ট্রাষ্টের পক্ষ থেকে সব ছাত্রদের ফ্রি খাওয়ানো ও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে টাকা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। 

সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক ডা. এ পি বণিক বলেন, ছেলেটির অবস্থা তেমন ভালো না। যে কোন সময় খারাপ হয়ে যেতে পারে। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তাই চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ছেলেটিকে।

সাতকানিয়া থানার ওসি তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, শিক্ষকের ছাত্রকে এভাবে পেটানোর ঘটনাটি খুবই নির্মম। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ ঘটনায় ছাত্রটির অভিভাবক মামলা দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028359889984131