ছাত্রলীগ নেতা যাকে-তাকে দিয়ে হাত-পা টেপাতেন

বগুড়া প্রতিনিধি |

রাজনৈতিক পরিচয়ে বগুড়ার ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) ঘাঁটি গড়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল কুমার ঘোষ। শিক্ষার্থী না হয়েও থাকতেন কলেজ হোস্টেলের ২২৮ নম্বর রুমে। শিক্ষার্থীদের দিয়ে হাত-পা টিপে নিতেন নিয়মিত। খাওয়ার পর তার হাতও ধুইয়ে দিতে হতো। এমনকি নিজে থেকে ব্রাশও করতেন না। আর এসবের চুন থেকে পান খসলেই শিক্ষার্থীদের ওপর চলতো নির্যাতন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শুধু শিক্ষার্থীই নয়, ছাত্রলীগের এ নেতার জন্য তটস্থ থাকতেন শিক্ষকেরাও। অবশেষে শিক্ষার্থীদের বাঁধ ভেঙ্গে যায়। শিক্ষার্থীদের উত্তাল শ্লোগানের মুখে প্রাচীর টপকে পালিয়ে যান স্বঘোষিত এ বাদশা।

ছাত্রলীগের এ নেতার শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বেলা সাড়ে তিনটায় বগুড়ার ঠনঠনিয়ায় অবস্থিত ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে শেরপুর সড়কে এই অবরোধ শুরু করে তারা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, বহিরাগত সজল এই ক্যাম্পাসের কেউ না, কিন্তু বেশ কয়েকবছর ধরে সে জোরপূর্বক এখানে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম ও অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

মুশফিকুর রহিম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, সজল ঘোষ এখানকার কোনো শিক্ষার্থীই না। অথচ সে ২২৮ নম্বর রুমে থাকতো। সবাইকে দিয়ে হাত-পা টিপে নিতো। আমিও টিপেছি। খাওয়ার পর হাত ধুইয়ে দিতে হতো আমাদের। ব্রাশ করে দিতো ছেলেরা। কলেজ অধ্যক্ষ সব কিছু জানেন। কিন্তু তিনি আরও প্রশ্রয় দিতেন সজল ঘোষকে।

আইএইচটির ডেন্টাল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম জানান, প্রতিমাসে সব শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ছাত্রাবাসে ‘মিল’ (খাবার) খরচ বাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা ওঠে। সেই টাকা থেকে সামান্য খরচ করা হয় খাবারের জন্য। খুব নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়। সজল এই ক্যাম্পাসের কেউ না হলেও সে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই ক্যাম্পাসে অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে আসছে।

জানতে চাইলে আইএইচটির হোস্টেলের সহকারী মোখলেছুর রহমান বলেন, সজল কখনই আমাদের শিক্ষার্থী ছিল না। সজলের বিষয়ে ছাত্ররাই তো কখনও অভিযোগ দেয়নি। ও রাজনীতি করে, কথা বলাই তো সো টাফ হয়ে যায়। রাজনীতির প্রভাব দিয়েই আইএইচটিতে প্রবেশ করেছে সে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সজলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আইএইচটির অধ্যক্ষ ডা. আমায়াত উল হাসিন বলেন, শিক্ষার্থীরা তাকে আগে এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি। সজল ক্যাম্পাসে যাতায়াত করে জানি, কিন্তু ছাত্রাবাসে থাকে এ বিষয়ে জানা ছিল না। সে যদি কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035688877105713