দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক: গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় রাস্তায় মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রোমান তালুকদারের বিরুদ্ধে ঘুষি দিয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র মো. রেজাউল করিম ওরফে টিটুকে (১৭) হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের বুধী পশ্চিম পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
রেজাউল উপজেলার বুধী কোনাপাড়া এলাকার মো. আলীর ছেলে এবং স্থানীয় জটিয়াবর মহাবিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার শিক্ষার্থী ছিল। অভিযুক্ত রোমান তালুকদার পশ্চিম বুধী এলাকার আইয়ুব আলী খানের ছেলে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কাবিখা কর্মসূচির আওতায় নির্বাচনী এলাকার বিশেষ বরাদ্দে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বুধী গ্রামের রাস্তায় ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর রাস্তার পাশে শিক্ষার্থী রেজাউলের চাচা মো. আবদুল হাকিমের খেত থেকে ভেকু দিয়ে গভীর করে মাটি কেটে রাস্তায় ফেলা হয়। এ সময় রেজাউল তা দেখে এতে বাধা দেয়। এ নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা রোমান তালুকদারের সঙ্গে রেজাউলের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রেজাউলকে রোমান এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে থাকলে রেজাউল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রেজাউলের চাচা হাকিম বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা রোমান তালুকদার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমাদের কারও সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করে হঠাৎ ভেকু মেশিন নিয়ে এসে আমার খেত থেকে মাটি তুলতে থাকেন। পরে রেজাউল তাঁকে মাটি তুলতে নিষেধ করে। এ সময় গ্রামের কয়েকজন ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি দেখে খেত গভীর না করে মাটি তুলতে অনুরোধ জানান রোমানকে। কিন্তু রোমান উত্তেজিত হয়ে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ দিয়ে ধরে নিয়ে যাবেন, এমন ভয় দেখান রেজাউলকে। একপর্যায়ে তিনি রেজাউলকে কিলঘুষি মেরে আহত করেন। স্থানীয় মানুষেরা রেজাউলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত রোমান তালুকদারের মুঠোফোন বল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেজাউলের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তার মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের সহসভাপতি রোমানের কিলঘুষিতে রেজাউল নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে নেত্রকোনা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁদের নাম এখনই বলছি না।’