ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার জন্য আমি সাত দিনের সময় দিয়েছিলাম। রোববার (১৩ অক্টোবর) সেই সময় শেষ হবে। রোববারের মধ্যে যদি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা না হয়, তাহলে সোমবার থেকে আমার দাবির সমর্থনে আপনারা এখানে (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়) আন্দোলন শুরু করবেন।
নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আমি ঢাকায় মাঠে থাকবো।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের একমাত্র জঙ্গি সংগঠন হলো ছাত্রলীগ। আওয়ামী লীগ থেকে মুক্তি পেতে হলে আগে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসীদের থেকে মুক্তি পেতে হবে। আগে ছাত্রলীগকে দিয়ে শুরু করি, পরে আওয়ামী লীগকে ধরবো।
এসময় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিফল হলে বাংলাদেশে আবারও ভারতীয় কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। এজন্য তিনি সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ আহ্বান জানান মাহমুদুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসির করিডোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ সভার আয়োজন করে।
সভায় মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘দুটো লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়েছিল। প্রথম লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন ঘটানো। দ্বিতীয়ত, ভারতীয় আধিপত্যবাদকে নির্মূল করা। আমাদের প্রথম লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়টা আমরা এখনো অর্জন করতে পারিনি। এখন সুযোগ এসেছে ভারতীয় আধিপত্যবাদ চিরতরে উৎখাত করার। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সব চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ এই সরকার না টিকলে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সীসাঢালা ঐক্য লাগবে। ১৮ কোটি জনগণ যদি এক থাকে তাহলেই ভারতীয় আধিপত্যবাদের উৎখাত সম্ভব।’
সরকারের সমালোচনা করে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক বলেন, ‘সরকার এখন পর্যন্ত তাদের শক্তি দেখাতে পারেনি। সরকার খুব স্লো। তারা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এখনো কোনো অর্থবহ অ্যাকশন নিতে পারেনি। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কোন আইনে সে ভারতে বসে আছে? সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আছে।’
শেখ হাসিনাকে দিল্লির ঘৃণ্য এজেন্ট উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘১৬ বছর ধরে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিস্ট ও ইসলামবিরোধী সরকার ছিল সেটি সরাসরি দিল্লি থেকে পরিচালিত হয়েছে। ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে ইসলাম এবং বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য সে দিল্লি থেকে এসেছিল। পতনের পর এখন আবার প্রভুর কাছেই আশ্রয় নিয়েছে। দিল্লি ছাড়া তার আর যাওয়ার জায়গা নেই।’
এসময় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও আমার দেশ পত্রিকার নগর সম্পাদক এম আব্দুল্লাহ, এবি পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মেজর আব্দুল ওয়াহাব মিনার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইটসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।