ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেছেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সুসংগঠিত একটি সংগঠন। এই সংগঠন একটি ধারায় পরিচালিত হয়। আগামী দিনগুলোতে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে কোনো বিভেদের সুযোগ নেই। গ্রুপিংয়ের সুযোগ নেই। ছাত্রলীগ ঐক্যবদ্ধ। ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের আলাদা গ্রুপ আগে ছিল বলে আমার জানা নেই। এই গ্রুপিং এখন নেই, আগামীতেও থাকবে না। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
দীর্ঘদিন ধরে সারা দেশে ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গ্রুপে বিভক্তি, নতুন নেতৃত্বের সামনে চ্যালেঞ্জ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ নানা ইস্যুতে কথা বলেন তিনি। নতুন দায়িত্ব পাওয়ায় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, সৃষ্টির শুরু থেকে ছাত্রলীগের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য একই। ছাত্রলীগ এদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য, সমাজের জন্য, তরুণ প্রজšে§র জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দেশের মানুষের স্বাধিকার আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী লড়াই-সংগ্রাম, দুর্যোগ, দুর্বিপাকসহ যে কোনো সংকটে ছাত্রলীগ সব সময় পাশে ছিল, আছে এবং আগামীতে থাকবে। স্বাধীনতা সংগ্রামের আগে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যেভাবে ভূমিকা রেখেছে, তেমনি স্বাধীনতার পরও এ দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় বজায় রাখার জন্য এবং বাংলাদেশের ধর্ম নিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রীয় চেতনা বজায় রাখার জন্য সব থেকে বেশি কাজ করে যাচ্ছে।
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনা মহামারি, বন্যা, দুর্যোগ বা সংকটে সাধারণ মানুষের পাশে ছাত্রলীগ আগে দাঁড়িয়েছে। এটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-মিশন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য দেশরত্ন শেখ হাসিনার চলার পথকে মসৃণ রাখা। আমাদের লক্ষ্য এদেশের তরুণ সমাজকে নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার নিরঙ্কুশ বিজয় নিশ্চিত করা এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ঘোষিত দিন বদলের সনদ বাস্তবায়নে কাজ করা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা যেভাবে ভূমিকা রেখেছেন, তেমনিভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের জন্য কাজ করবেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে।
তরুণ সমাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে- এ ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের ভূমিকা কী জানতে চাইলে শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বাংলাদেশের তরুণ সমাজ ঐক্যবদ্ধ। তারা পর্যালোচনা করে দেখেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দিন বদলের সনদ দিয়েছিলেন। তা তিনি বাস্তবায়ন করেছেন। তারা দেখেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ কিন্তু আজ দৃশ্যমান। তারা (তরুণ) উদ্বুদ্ধ, উচ্ছ্বসিত, কারণ বঙ্গবন্ধুকন্যা স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলেছেন। তারা (তরুণ) বিশ্বাস করেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যা বলেন, তিনি তা করে দেখান। বর্তমান তরুণ সমাজ স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছেন। তাই একটিই মাত্র লক্ষ্য আগামী নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করা। স্মার্ট বাংলাদেশ করার জন্য তরুণরা অবশ্যই নৌকায় ভোট দেবেন। ছাত্রলীগ তরুণদের সঙ্গে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে কাজ করবে। ছাত্রলীগের সামনে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ দেশমাতৃকা রক্ষা, দেশের পতাকা মর্যাদা রক্ষা, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা আন্দোলন বেগবান রাখার জন্য সব সময় চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে এসেছে। সেই ১৯৪৮ সাল থেকে আজ অবধি হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে ৭৫ বছর অতিক্রম করেছে। এই ৭৫ বছরে আমরা অনেক ঝড়, ঝঞ্ঝা, বিক্ষুব্ধতা মোকাবিলা করেই আজকের এই পর্যায়ে এসেছি। এদেশের শিক্ষার্থীদের আশার বাতিঘরে পরিণত হয়েছি। সামনের দিনগুলোতেও যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বদ্ধপরিকর। সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
শিক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রলীগ কী করবে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যাব। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা থাকবে, আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশরত্ন শেখ হাসিার স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সারা দেশের নেতা-কর্মীর উদ্দেশে কোনো বার্তা আছে কি না জানতে চাইলে শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, এই সংগঠনে কখনই গ্রুপিংয়ের সুযোগ ছিল না। আগামীতেও থাকবে না এবং সাংগঠনিক নিয়মনীতি এবং গঠনতন্ত্র যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। সাম্প্রদায়িক ও দেশবিরোধীদের আস্ফালন যদি দেখা দেয়, তাহলে তা প্রতিহত করতে সবসময় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা যেন প্রস্তুত থাকেন।