ছাত্রলীগের তিন নেতার বিচার দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা।
আজ রোববার সকাল নয়টা থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হয়। কর্মকর্তারা অফিসার সমিতির কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন। বেলা দুইটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কর্মসূচি চলছিল। কর্মবিরতির ফলে কার্যত অচল রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম।
গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় স্টোর (গুদামঘর) থেকে পুরোনো মালামাল দরপত্র ছাড়াই নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের হেনস্তারও অভিযোগ ওঠে।
ঘটনার বিচার চেয়ে ছাত্রলীগের তিন নেতার নাম উল্লেখ করে গত বৃহস্পতিবার উপাচার্য শিরীণ আখতারকে চিঠি দেয় অফিসার সমিতি। চিঠিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচার করা না হলে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
অফিসার সমিতির নেতারা আজ বলেন, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বিচার না হওয়ায় তারা আজ কর্মবিরতি পালন করছেন।
ছাত্রলীগের যে তিন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মোফাজ্জল হায়দার ইবনে হোসাইন, নজরুল ইসলাম ও সাদেক হোসেন।
মোফাজ্জল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ সিক্সটি নাইনের অনুসারী। তিনি ‘টাইগার মোফা’ নামে ক্যাম্পাসে পরিচিত। নজরুল বিজয় উপপক্ষ ও সাদেক ভার্সিটি এক্সপ্রেস উপপক্ষের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোফাজ্জল বলেন, অফিসার সমিতির অভিযোগ সত্য নয়। গত বুধবার তারা অফিসার সমিতির সভাপতিকে ইফতার মাহফিলের দাওয়াত দিতে কেন্দ্রীয় স্টোর শাখায় গিয়েছিলেন। তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে। এ বিষয়ে বিচার চেয়ে তিনি আজ প্রক্টর কার্যালয়ে চিঠি দেবেন। তিনিও চান, এই ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক।
নজরুল বলেন, তিনি এই ঘটনায় জড়িত নন। তাঁকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বিচার চেয়ে ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার ও প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
সাদেকের বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
ছাত্রলীগের তিন নেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত শুক্রবার সকালে এই কমিটি করা হয়।
কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালক আবদুল্লাহ মামুন। সদস্যসচিব সহকারী প্রক্টর হাছান মুহাম্মদ রোমান। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি করার পরও কর্মবিরতির বিষয়ে জানতে চাইলে অফিসার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হামিদ হাসান বলেন, তদন্ত কমিটির কাজের স্বার্থে তারা আগামীকাল সোমবার ও পরদিন মঙ্গলবার কর্মবিরতি স্থগিত রাখবেন। এর মধ্যে সুরাহা না হলে তারা বুধবার থেকে আবার কর্মবিরতিতে যাবেন।
তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর হাছান মুহাম্মদ রোমান বলেন, দুই পক্ষেরই সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দেবেন।