‘ছাত্রলীগের মতো গেস্টরুম কালচার, জবর দখল, হল দখল ও ক্যাম্পাস দখলের মতো কলুষিত রাজনীতি করবে না ছাত্রদল। সুষ্ঠু ধারার ছাত্র রাজনীতি চালু করতে পারলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সর্বাত্মকভাবে ছাত্রদলের পাশে থাকবে।’
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জের মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়া বাবনপুর গ্রামে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিমসহ সকল শহীদ যে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সাম্য, মানবিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে তারা রাজপথে ছিল। সে কারণে তারা শহীদও হয়েছেন। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিলুপ্ত করার জন্যই তারা রাজপথে ছিল। এই বাংলাদেশে যেন আর কখনো ফ্যাসিবাদ কায়েম না হয়, কোন স্বৈরাচার যেন আর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত না হতে পারে এবং দেশের কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হয়, সেই ধরনের সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে ছাত্রদল শহীদদের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে পথ চলবে। এটাই আমাদের অঙ্গীকার।
তিনি আরও বলেন, শহীদ আবু সাঈদসহ সকল শহীদ পরিবারের খোঁজখবর আমরা নিচ্ছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সর্বাত্মকভাবে শহীদ পরিবারের পাশে রয়েছে। বর্তমানে এবং আগামীতে কীভাবে শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য বিএনপি কাজ করবে তার একটি যোগসূত্র স্থাপনে ছাত্রদল ভূমিকা পালন করছে। আমরা প্রতিটি শহীদ পরিবারের সঙ্গে কথা বলব, শহীদদের কবর জিয়ারত করব। শহীদ পরিবারের তথ্য নিয়ে যাদের বেশি সমস্যা তাদের বেশি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে বিএনপি ও ছাত্রদল।
রাকিবুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার যেভাবে দমন, নিপীড়ন ও গণহত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তার অতি দ্রুত বিচারের দাবি জানাই। শুধু ছাত্র আন্দোলনই নয়, বিগত ১৫ বছরের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, আমরা অতীতের সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের সকল শহীদ পরিবারের পাশে ছাত্রদল থাকবে এবং তাদেরকে সহযোগিতা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
এর আগে, দুপুরে শহীদ আবু সাঈদের গ্রামের বাড়িতে আসেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।
সেখানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের কবর জিয়ারত শেষে নিহতের পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন ও সমবেদনা জানান ছাত্রদল নেতারা। এ সময় রংপুর মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমরান খান সুজন ও জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরিফ নেওয়াজ জোহাসহ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজ, রংপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ জেলা ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০২০ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কও ছিলেন আবু সাঈদ।