নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সরকারি তোলারাম কলেজে ফরম পূরণের টাকা জমা দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মারধরের শিকার হয়েছেন আতা-ই-রাব্বি ও আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে দুই শিক্ষার্থী। তারা দু’জন যথাক্রমে ওই কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক। বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটার দিকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার আতা-ই-রাব্বি জানান, তিনি স্নাতক (সম্মান) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন অর্থনীতি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। প্রথম বর্ষের একটি বিষয়ের মান উন্নয়ন (ইম্প্রুভমেন্ট) পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণের টাকা জমা দিতে কলেজে গিয়েছিলেন। টাকা জমা দেওয়ার পরপরই কলেজের প্রধান ক্যাম্পাসে মারধরের শিকার হন তারা দু’জন। রাব্বির অভিযোগ, কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। তাদের যখন মারধর করা হচ্ছিলো তখন অদূরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন মহানগর ছাত্রলীগ ও তোলারাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ।
আতা-ই-রাব্বি বলেন, “ফরম পূরণের টাকা জমা দেওয়ার পরপরই ১০-১২ জনের একটি দল আমাকে ঘিরে ফেলে। তারা বলে, ‘ছাত্রলীগের এলাকায় ছাত্রদলের রাজনীতি করার সাহস কীভাবে পাস?’ এই কথা বলেই মারধর শুরু করে। ভিন্ন দল করার কারণেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের মারধর করেছে।” এ বিষয়ে পরিবার ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সাথে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহমেদ বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয় সাধারণ ছাত্র হিসেবে তারা দু’জন ফরম পূরণ করতে গিয়েছিল। অথচ সেখানেও নির্যাতনের শিকার হতে হলো। এর আগেও তোলারাম কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থী, সাংবাদিক মারধরের শিকার হয়েছে। কোনো প্রতিকার হয়নি। এটা সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র।’
তবে এ বিষয়ে জানতে মহানগর ছাত্রলীগ ও তোলারাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি দাবি করে সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক বেলা রাণী সিংহ বলেন, তিনি বেলা আড়াইটা পর্যন্ত কলেজেই ছিলেন। এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি শোনেননি।
এদিকে মারধরের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন মহানগর যুবদলের সভাপতি ও স্থানীয় কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তিনি দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।