ঝালকাঠির একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়তে গেলে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক দপ্তরি কাম প্রহরীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। অভিযোগ ওঠার পর দপ্তরি পালিয়ে গেছেন।
শুক্রবার ভোরে নলছিটি উপজেলার আমিরাবাদ এলাকার ৮নং আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
অভিযুক্ত দপ্তরি কাম প্রহরীর নাম, আলমগীর হোসেন ওরফে খোকন। তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান বিদ্যালয়েরে প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গির হোসেনের ছোট ভাই এবং ওই উপজেলার মগড় ইউনিয়নের উত্তর মগর গ্রামের প্রয়াত মজিদ সিকদারের ছেলে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, খোকন বিদ্যালয়ের দপ্তরি হলেও স্কুলের কক্ষেই সে নিয়মিত প্রাইভেট পড়িয়ে আসছে। শুক্রবার সকালে পঞ্চম শ্রেণির দুই ছাত্রী তার কাছে পড়তে আসে। সকাল ৮টায় প্রাইভেট পড়ানোর কথা থাকলেও ছাত্রীরা ভোর সাড়ে ৬টায় স্কুলে আসায় সন্দেহ হয় স্কুল মাঠে ফুটবল খেলতে আসা স্থানীয় তরুণ-যুবকদের।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মাঠে খেলতে আসা তরুণ মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমিসহ কয়েকজন স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করলে দোতালার একটি কক্ষে একটি মেয়েকে দেখতে পাই। পাশের কক্ষের দরজায় বেঞ্চ দিয়ে আটকানো দেখি। এসময় বেঞ্চ সরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ও ওই প্রহরী খোকনকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেখতে পাই। এসময় খোকন আমাকে মারধরও করে। তবে আমার সঙ্গে অন্যরা থাকায়ি আমি রক্ষা পাই।
এদিকে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর অভিযোগ, খবর পেয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঘটনাস্থলে এসে তার ভাইকে চড়-থাপ্পর দেয়ার নাটক করে কৌশলে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। প্রধান শিক্ষকের প্রভাবে তার ছোট ভাই দপ্তরি খোকন ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দেও ঘটনা ঘটায়। ঝালকাঠি জেলার ৮নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। ছাত্রীদের স্কুলের নানা অনিয়মের অভিযোগের কথাও বলেন এলাকাবাসী।
এদিকে এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ছে এলাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত দপ্তরির বিচার দাবিতে এলাকাবাসী দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে আধাঘন্টা ঝালকাঠি-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এসময় রুটের অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
৮নং আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গির হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তার ছোট ভাই অভিযুক্ত নৈশ্য প্রহরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন। তার ভাইকে প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, দপ্তরিকে বরখাস্তবা বদলি করার ক্ষমতা আমার নেই। তবে কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় যে ব্যবস্থা নেবেন, তাই আমি মেনে নেবো।
ঘটনাস্থলে প্রাথমিক তদন্তে আসা নলছিটি থানার এসআই শহীদুল আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ভিকটিম ও তার মাকে আমরা থানায় নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করছি। অভিযুক্তকে আটকেও অভিযান চলছে। এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।