ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি, তদন্তে নেমেছে শিক্ষা অধিদপ্তর

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি |

চুয়াডাঙ্গা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে সরেজমিন তদন্ত করেছে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে গঠন করা তদন্ত কমিটি। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন কমিটির সদস্যরা। তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্রুতই তদন্ত রিপোর্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে তার পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে তাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে সাক্ষর নিয়েছেন দুই শিক্ষক। তারা মূলত অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতেই শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরযুক্ত স্মারকলিপি তদন্ত কমিটিকে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় স্বাক্ষরের কাগজগুলো পুড়িয়ে ফেলেছেন প্রধান শিক্ষক মো. মাসুদুজ্জামান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তদন্তের সময় প্রধান শিক্ষকের আচরণ ছিলো সন্দেহজনক।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা শহরের কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক ওবাইদুল ইসলাম তুহিনের বিরুদ্ধে গত ২৫ জুন পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। স্কুলের অদূরে একটি ভাড়া ঘরে প্রাইভেট পড়ান এই শিক্ষক। ঘটনার দিন সব শিক্ষর্থীকে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই ছুটি দেন। শুধু ভুক্তভোগী ছাত্রীকে আরও অংক করতে হবে বলে থাকতে বলেন। এরপর ওই ছাত্রীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন ওবাইদুল ইসলাম তুহিন। এ ঘটনায় ওই দিনই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা-বাবা চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক ওবাইদুল ইসলাম তুহিনকে গ্রেপ্তার করে। 

ছবি: সংগৃহীত

অভিযুক্ত শিক্ষক তুহিনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতের বিচারক ছাত্রীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। অভিযুক্ত শিক্ষক তুহিনকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তুহিন জামিনে মুক্ত আছেন। তবে তাকে স্কুল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

বিষয়টি নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসকে তদন্ত করার নির্দেশনা দেয় শিক্ষা অধিদপ্তর। নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান, চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ কুমার সাহা বৃহস্পতিবার সরেজমিন তদন্ত ও ভুক্তভোগীসহ কয়েকজন শিক্ষকের বক্তব্য নেন। 

চুয়াডাঙ্গা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাসুদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত ও আমাদের লিখিত বক্তব্য নিয়েছেন।
 
সাদা কাগজে শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়ে বলেন, দুইজন শিক্ষক পূর্নিমা রানী ও আনিচুর রহমান আমাকে না জানিয়েই শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর নিয়েছিলেন। আমি বিষয়টি জানার পর কাগজগুলো পুড়িয়ে ফেলেছি। 

তদন্ত কমিটির প্রধান জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় আমরা সরেজমিন গিয়েছিলাম। কয়েকজনের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পন্ন করে শিক্ষা অধিদপ্তরের পাঠানো হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ - dainik shiksha শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050921440124512