বগুড়ায় মেয়ের সহপাঠীদের অভিভাবকদের ডেকে অপদস্থকারী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াছমিনকে জেলা আদালত থেকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে।
এর আগে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, বগুড়া আদালতের একজন বিচারকের মেয়ে ওই বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন। বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দিয়ে পরিচ্ছন্ন করে থাকেন।
গত সোমবার ওই বিচারকের মেয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই ছাত্রী নিজেকে বিচারকের মেয়ে পরিচয় দিয়ে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে তার বিতণ্ডা হয়।
ওই রাতে বিচারকের মেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সহপাঠীদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে পোস্ট দেন। ওই পোস্টে তার চারজন সহপাঠী পাল্টা মন্তব্য করেন। এ নিয়ে বিচারক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকে মঙ্গলবার অভিভাবকদের স্কুলে ডাকতে বলেন। এ দিন বেলা ১১টার দিকে প্রধান শিক্ষকের ডাকে ওই চার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা বিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় বিচারক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিভাবকরা এসময় ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
অভিভাবকদের মাফ চাওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা বিকেল চারটার দিকে রাস্তা অবরোধ করেন। বিকেল ৫টার দিকে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াছমিন বিদ্যালয়ে আসেন। তিনি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন। এ সময় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান, বিচারককে স্কুলে এসে আলোচনায় বসতে হবে। পরে প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বিচারককে স্কুলে আসার অনুরোধ জানান। কিন্তু তিনি আসতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
মঙ্গলবার রাতেই জেলা প্রশাসককে ফোন করে জেলা জজ জানান, অভিযুক্ত বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।