দৈনিক শিক্ষাডটকম বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক শিক্ষার্থীর বুকে লাথি মেরেছেন এক শিক্ষক। গত বৃহস্পতিবার বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঘটা এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে বিষয়ে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হলরুমে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জগদীশ ভক্তের সভাপতিত্বে অনু অভিভাবক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সভায় উপস্থিত ছিলেন।
নির্যাতিত কিশোর হলো ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিৎ মল্লিক। তার বাড়ি পাশের গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পিড়েরবাড়ি গ্রামে। সে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে মেসো পুলিন জয়ধরের বাড়ি থেকে লেখাপড়া করছে। আর অভিযুক্ত হলেন বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রশান্ত কুমার জয়ধর।
জানা গেছে, আগৈলঝারা উপজেলার বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রশান্ত কুমার জয়ধর নবম শ্রেণির ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থী জিৎ মল্লিকের বুকে লাথি মারেন। ক্লাসের সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলার অপরাধে প্রশান্ত কুমার ক্ষিপ্ত হয়ে জিৎ মল্লিকের বেঞ্চের ওপর উঠে চুল ধরে তার বুকে লাথি দেন বলে জানা গেছে।
গতকাল সোমবারের সভায় জিৎ মল্লিক উপস্থিত সবার সামনে এ ঘটনা তুলে ধরেন। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষক প্রশান্ত কুমার জয়ধর ঘটনাটি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ দাবি করে সবার সামনে দুঃখ প্রকাশ করেন।
সভায় বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সত্য রঞ্জন বাড়ৈ, ইউপি সদস্য (মেম্বার) রনজিত ভক্ত, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য দীলিপ তালুকদার, মন্টু শিকদার, স্বপন পান্ডে, শিক্ষার্থীর অভিভাবক বীরেন বৈদ্য, মো.হাফিজুর রহমান, নীল রতন মন্ডলসহ অনেকে। উপস্থিত ছিলেন নির্যাতিত শিক্ষার্থী জিৎ মল্লিকের আত্মীয় পুলিন জয়ধর।
সভায় সবার মতামতে অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাকে তিন কর্ম দিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। এছাড়া ওই ঘটনায় অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার জয়ধরের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় তা খুঁজে বের করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট জমা দেবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সত্য রঞ্জন বাড়ৈ বলেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সভায় উপস্থিত সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে ফোন করেছিলেন। ওই ঘটনায় সার্চ কমিটি গঠন করার কথা শুনেছি।