ছাত্রের মৃত্যুর দায় হাসপাতালের ওপর চাপানো ভিত্তিহীন, প্রেস ব্রিফিংয়ে কর্তৃপক্ষ

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

ঢাকা ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যুর দায় হাসপাতালের ওপর চাপানো ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

অভিজিতের মৃত্যুর দিন রাতে মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি ৯০ ভাগ সমাধান হওয়ার পরও তারা অন্যান্যদের তা না জানানোয় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

মঙ্গলবার অভিজিতের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল ও কলেজে হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ব্রি. জে. (অবসরপ্রাপ্ত) ইফফাত আরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের খবর থেকে প্রতীয়মান হয়, কোনো কোনো কুচক্রী মহল হাসপাতালের ওপর মিথ্যা দায়ভার চাপানোর চেষ্টায় লিপ্ত যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। রোগীর মৃত্যু হলেই ভুল চিকিৎসা, দায়িত্বে অবহেলা বলে চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের লাঞ্ছিত করা যেনো নিয়মে পরিণত হয়েছে। 

আরো পড়ুন: প্রশ্নের জেরে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হলেন ন্যাশনালের শিক্ষার্থী-চিকিৎসকরা

ইফফাত আরা আরো বলেন, হাসপাতালের রোগীর চিকিৎসা সেবার সুস্থ পরিবেশ বিনষ্ট করা, হাসপাতালের সকলস্তরের চিকিৎসক নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জিম্মি করে হাসপাতাল ও কলেজ ভবনের ব্যাপক ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করা, অসুস্থ্য রোগীদের মাঝে ভীতি সঞ্চার করার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

আরো পড়ুন: ছাত্রের মৃত্যু: ন্যাশনাল মেডিক্যালের ৩ চিকিৎসক বরখাস্ত, তদন্তে কমিটি

ন্যাশনাল কলেজে হামলায় দশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। তিনি বলেন, ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিভিন্ন কলেজের প্রায় ১০০০ থেকে ১৫০০ শিক্ষার্থী হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যালয়, বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ, দন্ত বিভাগ ও প্যাথলজি বিভাগে ব্যাপক ভাঙচুর করে। 

এ ছাড়া ক্যাশ কাউন্টারে ভাঙচুর করে নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। হাসপাতালের অভ্যন্তরে দেশি-বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী, সাধারণ রোগী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আর্থিক সেবায় নিয়োজিত পূবালী ব্যাংকের শাখাতেও ব্যাপক ভাঙচুর করে। 

সংবাদ সম্মেলনেদশ হাজার টাকার বিনিময়ে মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কলেজের উপ-পরিচালক ডা. মো. রেজাউল হক বলেন, আমরা নিহতের পরিবারের অনুরোধে তাদের আইসিইউ বিল ৩৬ হাজার টাকার বিল স্থগিত রাখি। তার পরবারের কাছে অ্যাম্বুলেন্স বিল ছিলো না। সেটার জন্য আমরা দশ হাজার টাকা দিতে যাই। পরে তারা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম কর্তৃপক্ষের থেকে অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করতে সক্ষম হয়। আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন, দশ হাজার টাকা দিয়ে কি মৃত্যুর ঘটনা চাপা দেয়া সম্ভব? 

রোগীর মেডিক্যাল টেস্টের রিপোর্ট না দেখানো, আইসিইউতে ভর্তি ও ডেথ সার্টিফিকেটে জোর করে পরিবারের নিকট থেকে জোর পূর্বক সাক্ষরের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, রাতে আমাদের হাসপাতালে সিনিয়র কেউ থাকে না। সিকিউরিটি ইনচার্জ ও ইমার্জেন্সি ডাক্তার থাকে। তাদের (মোল্লা কলেজ) স্টুডেন্টরা যখন আসে তখন আমরা হাসপাতালে ছিলাম না। পরে আমরা আসি। আমরাই জিম্মি ছিলাম। পরে পুলিশ, আর্মির সাহায্যে রক্ষা পাই।

ন্যাশনাল মেডিক্যাল ও ডা. মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের দ্বন্দে সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের জড়িতের ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, অভিজিতের মারার যাওয়ার ঘটনায় তার কলেজের ৩০/৪০ জন হাসপাতালে আসে। তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনাও হয়। সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এসেছিলো তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করতে এসেছিলো। তখন তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এটা আমাদের ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনা।

এদিকে অভিজিতের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও ডাক্তারের অব্যাহতির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করি। সেখানে ড. মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি রাখার জন্য বলা হয়। তাদের বলা হয় দেশের যেকোনো জায়গায় একজন রেজিস্টার্ড ডেঙ্গু বিশেষজ্ঞ রাখার জন্য। তারা দুই দিন পার হলেও তাদের প্রতিনিধি দেয়ার বিষয়ে কিছু জানায়নি। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কর্তব্যরত ডাক্তার শেফাকে কর্ম থেকে বিরত থাকতে বলেছি। সংবাদ সম্মেলনে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালসহ শিক্ষক, ডাক্তার ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছার আগে নোট-গাইড ছাপা বন্ধের নির্দেশ - dainik shiksha পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছার আগে নোট-গাইড ছাপা বন্ধের নির্দেশ ৭৫ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ইউএনওর খোলা চিঠি - dainik shiksha ৭৫ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ইউএনওর খোলা চিঠি শিক্ষকদের সতর্ক করে বদলি আবেদনের তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha শিক্ষকদের সতর্ক করে বদলি আবেদনের তারিখ ঘোষণা ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাকৃবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি শুরু ৯ ডিসেম্বর - dainik shiksha বাকৃবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি শুরু ৯ ডিসেম্বর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জুলাই আন্দোলনকে ভারতের স্বীকৃতি দেয়া উচিত - dainik shiksha জুলাই আন্দোলনকে ভারতের স্বীকৃতি দেয়া উচিত please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0061640739440918