ময়মনসিংহ নগরীতে ঈদের দিন ইজিবাইক ও রিকশাচালকের টাকা ছিনতাই করতে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে তিন তরুণ। খুনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার তাদের আদালতে তোলা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিন তরুণের মধ্যে দুই জন কলেজছাত্র।
নিহতরা হলেন, সদর উপজেলার দাপুনিয়ার শশ্যমালা গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেল সাদেক মিয়া (৩৫) ও একই উপজেলার চর ঘাগড়া এলাকার আক্কাস আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান (৫২)। সাদেক ও আক্কাস ইজিবাইক ও অটোরিকশা চালাতেন।
জানা যায়, ঈদের দিন ভোরের দিকে ছিনতাইকারী দলের তিন সদস্য জুবিলিঘাট বিপিন পার্কের সামনে ডিএনচক্রবর্তী রোডে হাবিবুর রহমানকে ও গোহাইলকান্দি পশ্চিমপাড়া এলাকায় সাদেক মিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। হাবিবুরকে গলায় ও সাদেককে বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে তাদের সঙ্গে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয় তিন সদস্যের তরুণ দল।
পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তিন তরুণকে শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে তিনকোনা পুকুর পাড় এলাকা থেকে আটক করে। তারা হলেন- গোহাইলকান্দি এলাকার ভজন কুমার দে'র ছেলে অনন্ত কুমার দে (১৯), জামতলা এলাকার মোহাম্মদ খোকনের ছেলে মোহাম্মদ মামুন (১৯), ও কাজী মিল্লাত হোসেনের ছেলে কাজী মো. মাহিন বাদশা (১৯)। এ ঘটনায় নিহত হাবিবুর রহমানের ছেলে শেখ ফরিদ ও সাদেক মিয়ার ভাই মুনতাজ মিয়া বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। হত্যায় ব্যাবহৃত ছুরি ও রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তিন তরুণের মধ্যে অনন্ত নগরীর শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজে ও মামুন কমার্স কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ালেখা করেন। তরুণ দলটির মধ্যে অনন্ত কুমার দে'র নামে ২০২০ সালে কোতোয়ালি থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানায়, তরুণদের দলটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে তাদের কাঙ্ক্ষিত স্থানে নিয়ে একই ছুরি দিয়ে ইজিবাইকচালক ও রিকশাচালক দুইজনকে হত্যা করে তাদের সঙ্গে থাকা টাকা নিয়ে যায়।
জোড়া খুনের ঘটনাটি নিয়ে রোববার জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, তরুণদের দলটি নেশাগ্রস্ত। নেশার টাকার জন্য তারা ছিনতাই করতেন। টাকা ছিনিয়ে নিতে বাঁধা দিতে গেলেই হত্যার ঘটনা ঘটায়।