দৈনিক শিক্ষাডটকম, কমলগঞ্জ : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা অনুমতি না নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এমন অভিযোগ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মুর্শেদা খাতুনের বিরুদ্ধে। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেন্দ্র কুমার সিংহ। তবে ওই শিক্ষিকা কোন দেশে অবস্থান করছেন তা তিনি জানেন না।
চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে জানা যায়, অনেকটা গোপনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন শিক্ষিকা মুর্শেদা খাতুন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্কুলের চার শিক্ষকের মধ্যে তিনজন রয়েছেন। সর্বমোট ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা ১১০ জন। প্রতিদিন শতভাগ ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিত থাকে এই স্কুলে। এর মধ্যে মুর্শেদা খাতুন নামের ওই সহকারী শিক্ষক গত ১২ অক্টোবর থেকে অনুপস্থিত রয়েছেন। এর পাঁচদিন আগেই তিনি দুই মাস চিকিৎসাজনিত ছুটি কাটিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বলেন, মুর্শেদা খাতুন চিকিৎসার জন্য দুই মাস ছুটি কাটান। আসলে এই দুই মাস তিনি বিভিন্নভাবে দেশের বাইরে যাওয়ার প্রসেসিং করেন। হঠাৎ এভাবে চলে যাওয়াটা মোটেও ঠিক হয়নি। সামনেই বাচ্চাদের বার্ষিক পরীক্ষা। বাচ্চাদের কথা ও দেশের কথা চিন্তা না করে এভাবে নিজের স্বার্থের জন্য চলে গেলেন তিনি।
চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, মুর্শেদা খাতুন জানেন আমি অসুস্থ এবং ছুটিতে আছি। বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে অন্তত আমায় তিনি জানাতে পারতেন। আমি অফিসিয়ালি তাকে সহযোগিতা করতাম। কিন্তু কোনোভাবেই ওনাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে লিখিতভাবে এ বিষয়ে অবগত করেছি। স্কুল সভাপতিকেও বিষয়টি জানিয়েছি। এখন তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
স্কুলের কমিটির সভাপতি আজিজুর রহমান আলাল বলেন, প্রধান শিক্ষক স্যারের মাধ্যমে জানতে পারলাম তিনি দেশের বাইরে আছেন। আমি জানিনা মুর্শেদা খাতুন আপা কোন দেশে আছেন। যদি বিদেশ চলে যান তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন ৬০ কর্মদিবসের জন্য চিকিৎসাজনিত ছুটিতে ছিলেন। ছুটি কাটিয়ে স্কুলে আসলেও হঠাৎ তিনি কোথায় গেছেন এখনও জানি না। তার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি নেই। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. খোরশেদ আলম জানান, বিষয়টা আমার জানা ছিল না। আমি উপজেলা প্রাথমিক অফিসারের কাছ থেকে খবর নিচ্ছি। সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা মুর্শেদা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।