ছুটির দিনে পাঠক-দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর বইমেলা

ঢাবি প্রতিনিধি |

ছুটির দিনে ছোট-বড় পাঠক-দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর ছিল অমর একুশে গ্রন্থ মেলা। শুক্রবার দশম দিনে শিশু প্রহর থাকাতে মেলাতে যুক্ত হয়েছে বাড়তি আমেজ। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের বইমেলা রূপ নিয়েছে যেন পাঠক-দর্শনার্থী-প্রকাশকের মিলন মেলায়।

শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে মেলা। মেলার শুরুর ভাগ শিশু প্রহর থাকায় শিশু-কিশোরদের পদচারণায় মুখর ছিল মেলা। এসময় সিসিমপুরের বন্ধুদের সঙ্গে মেতে ওঠে শিশু-কিশোররা।

পরিবারের ছোট্ট সদস্যটি মেলায় এসেছে বাবা-মায়ের হাত ধরে, কেউবা এসেছে বড় ভাই-বোনের সঙ্গে। কিনছেন. উল্টিয়ে দেখছেন, কেউ কেউ কিনছেন। কেউবা সঙ্গে আসা অভিভাবকের আঙ্গুল চেপে এক স্টল থেকে অন্য স্টলে ঘুরছেন।

তাসনিম জাহান লাবিবা, পড়েন রাজধানীর বেসরকারি একটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে। মেলায় এসেছেন বাবা-মায়ের সঙ্গে। মেলা কেমন লাগছে জানতে চাইলে লাবিবা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অনেক সুন্দর লাগছে! গত শুক্রবার এসেছিলাম সিসিমপুরের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয় নি। আজ তাঁদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, আমার ভীষণ ভালো লাগছে।

নুঝআত তাবাসসুম এসেছেন তার মায়ের সঙ্গে। নুঝআত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি অনেক অনেক বই কিনতে চাই। কার্টুনের কিছু বইও কিনতে চাই। তবে কেন জানি, পছন্দ হচ্ছে না! কিছু স্টিকার কিনেছি। 

এদিকে শিশুদের স্টলদের বেশ কয়েকজন বিক্রয়কর্মীর সঙ্গে কথা হলে তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শুক্রবার যেহেতু ছুটির দিন হওয়াতে শিশু-কিশোরদের আনাগোনা অনেক বেশি ছিল। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। 

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে হতে শিশুদের মেলা বড়দের দখলে চলে যায়। দুপুর পর থেকে মেলায় লোক সমাগম বৃদ্ধি পেতে থাকে। সরেজমিনে গিয়ে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায় উপচে পড়া। পাঠক-দর্শনার্থী-লেখক-প্রকাশকের সমাগমে মুখর ছিল বইমেলায়। 

তানজিবা তারান্নুম এসেছেন রাজধানীর রামপুরা থেকে। তানজিবা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গত শুক্রবারও এসেছিলাম, তবে এমন ভীড় হবে ভাবিনি। মনে হচ্ছে বইয়ের মেলার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মেলাও লেগেছে। তবে লোকসমাগম অনেক হলেও একটা উৎসবের আমেজের মত লাগছে এবারের অমর একুশে বইমেলা।

কোনো বই কেনা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে তানজিবা বলেন, হ্যাঁ এর আগের শুক্রবারে জাফর ইকবাল স্যারের বই কেনা হয়েছে। আজ হুমায়ুন আহমেদের দেয়াল উপন্যাস কেনা হয়েছে। আরও কিছু বই কেনার ইচ্ছে আছে।

সঞ্জয় কর্মকার একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, থাকেন মতিঝিলে। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন সহধর্মিণী ও পরিবারের ছোট্ট সদস্য রূপক কর্মকারকে সঙ্গে নিয়ে। সঞ্জয় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আজকেই মেলাতে প্রথম। এর আগেও আসতে এসেছিলাম, সময় হয়ে ওঠেনি। আজ হলো, ভালো লাগছে মেলা। 

বই কিনেছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো কেনা হয় নি। তবে আহমেদ ছফার পুরো রচনা সমগ্রটি কেনার এবার ইচ্ছে আসে। এছাড়াও বন্ধু-বান্ধবদের উপহার দেয়ার জন্য কিছু বই কেনা হবে এবার।

স্টুডেন্ট ওয়েজে বই বিক্রির চাপ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রকাশনাটির বিক্রয়কর্মী ফজলে রাব্বি বলেন, শুক্রবার হওয়াতে বই মেলাতে অনেক চাপ। দর্শনার্থীর সঙ্গে সঙ্গে পাঠকও অনেক বেড়েছে। বই বিক্রিও বেড়েছে মেলার অন্যান্য তুলনায়।

এদিকে জ্ঞানকোষ প্রকাশনের বিক্রয়কর্মী রিয়াজ হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের স্টলে আজ অনেক ভীড় ছিলো। মনে হচ্ছে মেলায় অন্যান্য দিনগুলোর তুলনায় দর্শনার্থী সমাগমের সঙ্গে পাঠকের উপস্থিতিও ভালো ছিল। আমরা আশাবাদী বাকি ২০ দিন ভালো বিক্রি হবে।

নতুন বই : 

মেলার দশম দিনে নতুন বই এসেছে ২৬০টি। গল্প ৩০টি, উপন্যাস ৪৬টি, প্রবন্ধ ১৩টি, কবিতা ৭৯টি, গবেষণা ৪টি, ছড়া ৮টি, শিশুসাহিত্য ১৮টি, জীবনী ৬টি, রচনাবলী ২টি, মুক্তিযুদ্ধ ৩টি, নাটক ৩টি, বিজ্ঞান ১টি, ভ্রমণ ৮টি, ইতিহাস ৫টি, রাজনীতি ১টি, স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ১টি, বঙ্গবন্ধু ১টি, রম্য-ধাঁধা ২টি, ধর্মীয় ৩টি, অনুবাদ ২টি, সায়েন্স ফিকশন ৬টি এবং অন্যান্য ১৮টি বই নতুন এসেছে।

শনিবারের সময়সূচি ও আলোচনা অনুষ্ঠান:

আগামীকাল শনিবার অমর একুশে বইমেলার একাদশ দিনে সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে চলবে ৯টা পর্যন্ত। শিশুপ্রহর চলবে সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।

এদিকে সকাল ১০টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে কেন্দ্রে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026400089263916