ছয় ডাক্তারকে বরখাস্ত নিয়ে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ছয়জন চিকিৎসককে বরখাস্ত করার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনাকে ‘সমন্বয়হীনতার ব্যর্থতা’ এবং ‘উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর একটা কৌশল মাত্ ‘ বলে মন্তব্য করেছে চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ)।

একই সাথে অনুপস্থিত চিকিৎসকদের বরখাস্ত করে ‘জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিয়ে চিকিৎসকদের বিব্রত করে প্রশাসন কি অদক্ষতার পরিচয় দেয়নি?’ প্রশ্ন তুলেছেন সংগঠনটির নেতারা।

রোববার (১২ এপ্রিল) স্বাস্থ্য সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে এ বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। একইসাথে বরখাস্ত করে আদেশ জারির মাধ্যমে চিকিৎসকদের হয়রানিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। 

বরখাস্ত হওয়া ৬ চিকিৎসক হলেন, গাইনী বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট শারমিন হোসেন, আবাসিক চিকিৎসক মুহাম্মদ ফয়জুল হক, কনসালটেন্ট হীরম্ব চন্দ্র রায়, মেডিকেল অফিসার ফারহানা হাসনাত উর্মি পারভিন ও কাওসারউল্লাহ।

সংগঠনটি মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি আদেশে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ছয় জন চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমাদের জানামতে উল্লিখিত কর্মকর্তাদের বরখাস্তের আগে তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ দেয়া হয় নাই। সেখানে দুইজন চিকিৎসক রোস্টার ডিউটিতে ছিলেন। একজন চিকিৎসক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গিয়ে জানতে চেয়েছেন তিনি ১ থেকে ৭ এপ্রিল ডিউটি শেষ করে বর্তমানে পরবর্তী রোস্টেশনের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি কেন বরখান্ত হলেন? আরেকজন চিকিৎসক মিডিয়াতে বলেছেন তিনি ৩১ মার্চ পর্যন্ত ডিউটি করেছেন, পুনরায় ১৫ এপ্রিল রোস্টার অনুযায়ী কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়ার কথা। তিনি বর্তমানে একটি হোটেলে কোয়ারেন্টিনে আছেন। 

চিঠিতে আরও বলা হয়, দুইজন চিকিৎসককে ১৩ ফেব্রুয়ারি ও ১৫ ফেব্রুয়ারিতে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পদায়ন করা হয়েছে। তারা ওখানে যোগদান করেছেন। ‘তাদেরকে এখন কেন বরখাস্ত করা হলো?’ প্রশ্ন তোলা হয়েছে চিঠিতে। 

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এ সমন্বয়হীনতার ব্যর্থতা কি উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর একটা কৌশল মাত্র। জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিয়ে চিকিৎসকদের বিব্রত করে প্রশাসন কি অদক্ষতার পরিচয় দেয়নি?’

চিঠিতে বিএমএ নেতারা বলেন, চিকিৎসক হলেই যে মানুষ মানসিকভাবে খুব শক্ত হবেন এমন তো নয়। বিদেশে দুই একজন চিকিৎসক মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যাও করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুযায়ী ঝু্ঁকিপূর্ণ কাজে যে কেউ নিজেকে নিবৃত রাখতে পারেন। এসব চিকিৎসকদের বক্তব্য অনুয়ায়ী তারা কেউই কোভিড-১৯ রোগী দেখতে অপারগতা প্রকাশ করেননি। কোন কিছুই বিবেচনায় না নিয়ে সরকারি চাকরি বিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন না করে এসব চিকিৎসকদের বরখাস্ত আদেশ গোটা চিকিৎসক সমাজকেই হতাশ করেছে। জীবনের ঝুকি নিয়ে বাংলাদেশের চিকিৎসকরা অত্যন্ত সাহসের সাথে যেখানে করোনা মোকাবিলা করছেন, সেখানে এধরনের আদেশ হঠকারী ও অনভিপ্রেত।

চিঠিতে বলা হয়, প্রয়োজনে যে কাউকে অন্য কোথাও বদলি করা যেত, তাদেরকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেয়া যেত। কিন্তু হঠাৎ গণমাধ্যমের এ চাঞ্চল্যকর বিষয়টি বর্তমান মহামারি আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর সেবায় স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে খারাপ বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। এতে করে কারা লাভবান হচ্ছে বিষয়টি পরিষ্কার নয়।

তাই, এ ব্যাপারে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়ে চিঠিতে এসব তথ্য স্বাস্থ্য সচিবের কাছে উপস্থাপন করেছেন বিএমএ নেতারা। আর শিগগিরই চিকিৎসক হয়রানির আদেশের সাথে যারা জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055949687957764