জনগণের টাকায় সরকার যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট পুষছে : সংসদে রুমিন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী প্রথমে খুব কড়া ভাষায় যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করলেও এখন গলার স্বর নিচু। এখন নিজেদের সমস্যা খতিয়ে দেখার আলাপ হচ্ছে। প্রয়োজনে লবিস্ট, ল ফার্ম নিয়োগের কথা হচ্ছে। মজার বিষয় হচ্ছে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ কোনো নতুন বিষয় নয়। জনগণের করের কোটি কোটি টাকা খরচ করে দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট ফার্ম পুষছে সরকার।

রোববার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, একটি ফার্মকে গত বছর সরকার ত্রৈমাসিক ৮০ হাজার ডলার করে দিয়েছে, বছরের যার পরিমাণ ৩ লাখ ২০ হাজার ডলার (আনুমানিক ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা)। ওই ফার্ম বিজিআর ছাড়াও গত বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিডল্যান্ডার গ্রুপের সঙ্গে ৪০ হাজার ডলারে এক মাসের জন্য একটি চুক্তি করেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম। এ ছাড়া কোনওয়াগো কনসালটিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার এক মাসের জন্য আরেকটি চুক্তি করে। ৩৫ হাজার ডলার অগ্রিম দেয়ার শর্তে চুক্তিটি হয়।

রুমিন ফারহানা বলেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০০৫, ২০০৬ ও ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ অ্যালক্যাড অ্যান্ড ফে নামের লবিং প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ১২ লাখ ডলারের (১০ কোটি টাকার বেশি) বেশি দিয়েছে।

র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কথা তুলে ধরে রুমিন বলেন, পরিস্থিতি দেখে এটা স্পষ্ট– নিষেধাজ্ঞা এখানেই শেষ হচ্ছে না। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিশ্বের স্বনামধন্য ১২টি মানবাধিকার সংস্থা র‍্যাবের সদস্যদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে পদায়নের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘে জোর দাবি জানিয়েছে এবং জাতিসংঘও বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে। জনগণের করের টাকায় চলা একটি রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে দলীয় ক্যাডারের মতো ব্যবহার করে তাতে কর্মরত অনেক নিরপরাধ মানুষ এবং তাদের পরিবারের জীবনে সংকট তৈরি করেছে সরকার।

তিনি বলেন, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর এক মজার ঘটনা দেখা যাচ্ছে। এখন আর র‍্যাব গভীর রাতে সন্ত্রাসীদের নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে যাচ্ছে না কিংবা গোপন সংবাদ পেয়ে কোনো সন্ত্রাসীকে ধরতে গিয়ে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা পুলিশ বা র‍্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে না। আর তারপর পালানোর সময় মারা যাচ্ছে না কোনো নির্দিষ্ট মানুষ। ঠিক যেমন সন্ত্রাসীরা সাধু হয়ে গিয়ে র‍্যাবকে গুলি করা বন্ধ করেছিল সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদকে হত্যার পরপর।

নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক বাস্তবতা তাতে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো নির্বাচনকালীন সরকারটি কেমন। বাংলাদেশে মোটা দাগে যে চারটি নির্বাচনকে সুষ্ঠু ধরা হয়, তার প্রতিটিই হয়েছে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। ২০১৪ এবং ২০১৮ এরপর নির্বাচনি বাস্তবতা আরও অনেক বেশি কঠিন। এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে নির্বাচন কমিশনে যদি ৫ জন ফেরেশতাও বসানো হয় তারপরও আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া অসম্ভব। সুতরাং এখনই সময় এই বিষয়ে একটি স্থির সিদ্ধান্তে আসা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024130344390869