জন্মনিবন্ধন-নাম জালিয়াতি করে ২২ শিক্ষার্থীকে ভর্তি চেষ্টা

বগুড়া প্রতিনিধি |

জন্মনিবন্ধন ও নাম জালিয়াতির মাধ্যমে বগুড়ায় দুটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে সন্তানদের ভর্তির চেষ্টা করেছেন অভিভাবকরা। লটারির ফলাফল সিটে এমন ২২ শিক্ষার্থীর নাম ২-৩ স্থানে রয়েছে। কারও কারও নামে একটু পরিবর্তন করা হয়েছে। আবার ভর্তির বয়সসীমাও লংঘন করা হয়েছে। এ ঘটনায় বঞ্চিত শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। কান্নাকাটি করছে শিক্ষার্থীরা। তারা এ লটারি বাতিল করে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও দায়ী অভিভাবকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

এ প্রসঙ্গে স্বনামধন্য বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও বগুড়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা জানিয়েছেন, সম্মানিত অভিভাবকরা দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে বিদ্যালয়ের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তারা এ ব্যাপারে প্রতিকার পেতে মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন। বিদ্যালয় দুটির সূত্র জানায়, তৃতীয় শ্রেণির প্রভাতি ও দিবা শাখায় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০৬টি আসন থাকলেও আবেদন করে আট হাজার ৭৭৯টি। আর জিলা স্কুলে ২০৫টি আসনে আবেদন পড়ে ১১ হাজার ৪৯৮টি। দুটি প্রতিষ্ঠানে মোট ৪১১টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়ে ২০ হাজার ২৭৭টি। প্রতি আসনে ৪৯টি আবেদন করা হয়েছে। গত ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করার পর ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন সন্ধ্যার পর বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও বগুড়া জিলা স্কুলে লটারি শিট টানানো হয়। ফলাফলে দুটি প্রতিষ্ঠানের ১১ জন করে ২২ জন শিক্ষার্থীর ২-৩ স্থানে নাম দেখা যায়। এতে বঞ্চিত শিশুর অভিভাবকদের ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দেয়। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট ও পত্রিকা অফিসগুলোতে ফোন দিয়ে এ ব্যাপারে প্রতিকার দাবি করেন। আর শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়ে।

পরে লটারির ফলাফল শিট সংগ্রহ করে দেখা যায়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শর্মিলা আকতারের নাম তালিকার ১, ২ ও ৬ নম্বরে, ওয়াসফিয়া জান্নাতের নাম ৯৯ ও ১০২ নম্বরে এবং রায়হান মেহাজাবিন রাহার নাম দিবা শাখার ৯৭, ৯৮ ও প্রভাতি শাখার ৯৭ নম্বরে রয়েছে। আরও আটজনের একাধিক নাম রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর সবকিছু এক থাকলেও শুধু ইউজার আইডি ও জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি করা হয়েছে। রায়হান মেহাজাবিন রাহার বাবা আবদুর রাসেল প্রামাণিক জানান, মেয়েকে ভর্তির জন্য তার ভাই দুবার ও তিনি একবার আবেদন করেছেন।

প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিভাবকরা জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় এমনটা হয়েছে। ভর্তির শর্তের বয়সসীমাও লংঘন করা হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে মাউশি অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন। এ ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দায়ী নয়। অপরদিকে বগুড়া জিলা স্কুলে একই শিক্ষার্থী সুমন রহমান শফি দিবা শাখা ও সুমন রহমান শুভ প্রভাতি শাখায় সুযোগ পেয়েছে। তানজিম হাসান অর্থ ও তৌফিক ইসলামের নাম তিন স্থানে রয়েছে। এমন আরও আটজনের নাম একাধিক স্থানে রয়েছে। তাদের বাবা-মার নাম, ফোন নম্বর একই থাকলেও ইউজার আইডি ও জন্মনিবন্ধন নম্বর আলাদা রয়েছে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামকে অবহিত করলে তিনি এ ব্যাপারে মাউশিতে চিঠি পাঠানোর পরামর্শ দেন। প্রধান শিক্ষক শ্যামপদ মুস্তফী জানান, তার প্রতিষ্ঠানে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির লটারির ফলাফলে ১১ জন ছাত্রের নাম একাধিক স্থানে রয়েছে। তিনিও এ ব্যাপারে মাউশি অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো ভর্তি পরীক্ষা চালু হবে - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো ভর্তি পরীক্ষা চালু হবে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দুই দিনে আবেদন প্রায় দুই লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দুই দিনে আবেদন প্রায় দুই লাখ শিক্ষক নিয়োগেও নামকাওয়াস্তে মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হয়: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগেও নামকাওয়াস্তে মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হয়: গণশিক্ষা উপদেষ্টা পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার বিষয়বস্তু অপসারণের দাবি - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার বিষয়বস্তু অপসারণের দাবি এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক পাঠ্যপুস্তকে একক অবদান তুলে ধরা থেকে সরে আসার আহ্বান হাসনাতের - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে একক অবদান তুলে ধরা থেকে সরে আসার আহ্বান হাসনাতের ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003713846206665