‘তোমার বাপ আমার বিচার মানেনি, তাই তোমাকে নাগরিক সনদ আমি দেব না, পারলে আমার নামে মামলা করো।’এই বলে এক কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান। এসময় চেয়ারম্যান ওই ছাত্রকে উদ্দেশ্যে করে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দও করেন।
বৃহষ্পতিবার বেলা ১ টার দিকে রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটান ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো।
জানা গেছে, চেয়ারম্যানের মারধরে আহত তৌহিদুল ইসলাম (২০) জন্মবিন্ধন সনদ নেয়ার জন্য পরিষদের গিয়ে হামলার শিকার হন। তৌহিদুল ইসলাম রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আমতলিয়াপাড়া গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে এবং রামু সরকারি কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র।
হামলাকার শিকার তৌহিদুল ইসলামের মা খুরশিদা বেগম জানান- ১৫ দিন পূর্বে ছেলেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ জন্মনিবন্ধন সনদ নেয়ার জন্য ছেলেকে (তৌহিদ) পরিষদে পাঠান। কিন্তু বেশ কয়েকবার বিভিন্ন অজুহাতে ছেলেকে জন্মনিবন্ধন করার সুযোগ না দিয়ে ফেরত পাঠান। গত বুধবার আবারো জন্মনিবন্ধন সনদ সংগ্রহের জন্য গেলে চেয়ারম্যানের আমার ছেলের সকল কাগজপত্র রেখে দেয় এবং পরদিন যেতে বলে। চেয়ারম্যানের কথা অনুযায়ি আর বৃহষ্পতিবার পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান ছেলের পরিচয় জানতে চান।
এসময় পিতার না বলার সাথে চেয়ারম্যান চরম উত্তেজিত হয়ে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ শুরু করে এবং এক পর্যায়ে চৌকিদারকে দিয়ে বেত এনে ছেলে পিটাতে শুরু করে। মারধরের এক পর্যায়ে ছেলে মেঝেতে পড়ে গেলে চেয়ারম্যান আমার ছেলে তৌহিদের কোমরে লাথি মারে। পরে তৌহিদকে কয়েকজন যুবক উদ্ধার করে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
চেয়ারম্যানের উত্তেজিত হওয়া, গালমন্দ করা ও মারধরের একটি অডিও রেকর্ডও এ প্রতিবেদকের কাছে দিয়েছেন হামলার শিকার তৌহিদের মা খুরশিদা বেগম। ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের এ অডিও রেকর্ডে খুরশিদা বেগমের অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।
তৌহিদের মা আরও জানান- বিষয়টি তিনি বৃহষ্পতিবার, রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা মুস্তফাকে অবহিত করেন। এসময় ইউএনও রামু থানার ওসির সাথে কথা বলেন এবং থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর রাতে তিনি এ ঘটনায় রামু থানায় লিখিত এজাহার দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো জানান, এক ছেলে এসে আমাকে জন্মনিবন্ধন দেয়ার জন্য তড়িঘড়ি করছিল। আমি ঐ সময় ব্যস্ততার কারণে অপারগতা প্রকাশ করলে সে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তবে আমি কাউকে মারধর করিনি। যে ছেলে এসেছে তার বাবা এবং পুরো পরিবার এলাকার নামকরা খারাপ মানুষ।
জানতে চাইলে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মোস্তফা বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। অভিযোগটি অবশ্যই গুরুতর। তিনি নিরপেক্ষ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্যবস্থা নিবেন বলেন জানান।