জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র আবাসিক হল ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল’। এ হলে আবাসিক ছাত্রীদের সিট নবায়নের জন্য বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
জানা যায়, গত ৭ জুন আবাসিক শিক্ষার্থীদের সিট নবায়ন ও অন্যান্য খাতে ফি চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। সিট নবায়ন করতে ছাত্রীদের কল্যাণ, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ফি, দরিদ্র তহবিল ছাড়াও বেশকিছু খাতে মোট ৩ হাজার ৫০০ টাকা টাকা ফি চেয়ে নোটিশ দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নোটিশে উল্লিখিত ফিয়ের ১৬টি খাতের মধ্যে অধিকাংশই অপ্রাসঙ্গিক, বাস্তবতা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রশাসন অপ্রাসঙ্গিক কিছু খাত থেকেও টাকা নিচ্ছে, যার কোনো কিছুই বাস্তবায়ন হয় না। বিতর্ক, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আরো বেশ কিছু খাতের জন্য যে টাকাগুলো নিচ্ছে সবগুলোই অহেতুক। খালি রমজান মাসে একটা দিন ইফতার করিয়েছে। এছাড়া আর জীবনে কিছুই দৃশ্যমান নয়।
চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, হলে উঠার সময় আমরা যে খাতগুলোতে একবার টাকা দিয়েছিলাম সেই বিষয়গুলো আবার নতুন করে সংযুক্ত করছে। ২-১ টা বিষয় ছাড়া হল প্রশাসন কোনো কাজই করেনি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় তুলনায় নবায়ন ফি ও বেশি।
জানা গেছে, হলের সিট নবায়নে ছাত্রীদের কল্যাণ তহবিলে ২০০ টাকা, হল ক্রীড়া (আভ্যন্তরীণ) খাতে ১০০ টাকা, ধর্মীয় (হলের আভ্যন্তরীণ) খাতে ১০০ টাকা, হল পরিচয়পত্রের ১০০ টাকা, সাংস্কৃতিক (আভ্যন্তরীণ) খাতে ১০০ টাকা, দরিদ্র তহবিল খাতে ৫০ টাকা, লাইব্রেরি (আভ্যন্তরীণ) খাতে ৫০ টাকা, বিতর্ক (আভ্যন্তরীণ) খাতে ১০০ টাকা, সমাজ সেবা খাতে ১০০ টাকা, পড়ার কক্ষ খাতে ১০০ টাকা, উন্নয়ন খাতে ৩০০ টাকা, বিবিধ খাতে ১০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। তবে এসব খাতের বাস্তবায়ন নেই বলে অভিযোগ হলের ছাত্রীদের।
জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপীকা রানী সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীরা কোন খাতে কতো টাকা রাখতে চাচ্ছে, কোন খাতগুলো বাদ দিতে চাচ্ছে এবং তাদের অন্যান্য কোনো দাবি থাকলে সেগুলোসহ প্রত্যেক ফ্লোর থেকে স্বাক্ষর নিয়ে একটি আবেদনপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। সেটি উপাচার্য মহোদয়কে দেখনো হবে। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, এ জুন থেকে আগামী জুন পর্যন্ত কাজ করবো বলে আমি এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বলেছি। আমি না কাজ করলে আমাকে জিজ্ঞেস করবেন। আগের প্রভোস্ট কি করেছে না করেছে আমি জানি না। মেডিকেল সেন্টার, ডিবেটিং সোসাইটিসহ আমি উন্নয়নমূলক কাজ করবো। এ জন্য টাকার প্রয়োজন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্রী হলে ৬০০ শিক্ষার্থীর জন্য সিট বরাদ্দ দেয়ায় কথা থাকলেও পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থীকে সিট বরাদ্দ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্ত সিট বরাদ্দের টাকা কমানো হয়নি। পরবর্তীতে সিট নবায়নের নোটিশ জারি করলে শিক্ষার্থীরা ফি কমাতে আন্দোলন করেন ছাত্রীরা। ফি কমানোর পর পরবর্তীতে পুনরায় অপ্রাসঙ্গিক এসব খাতের ফি চেয়ে নোটিশ জারি করা হয়েছে।