জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ফিলিস্তিন ও মিয়ানমারের দিকে নজর দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভালো হতো যদি তাদের হাইকমিশনার এ দেশে (বাংলাদেশে) ২০১৩-২০১৪-২০১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসে হতাহতদের পরিবারের কথা শুনতেন। ফিলিস্তিনে শিশুরা ইসরায়েলি সৈন্যের দিকে ঢিল ছুড়লে প্রত্যুত্তরে বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়ে তাদের হত্যা করা হয়। আর রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে বাংলাদেশকে বাহবা দিলেই হবে না, মিয়ানমারে গিয়ে সেখানে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। মানাবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটা এসব দেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের নজর দেওয়া উচিত।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী জিয়া ও তার দল। জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করেছিল, খুনিদের পুনর্বাসিত করেছিল। শুধু তাই নয়, ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করতে হাজার হাজার সেনাসদস্যকে বিনাবিচারে হত্যা করেছিল। আর ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে তার তৈরি করে রেখে যাওয়া দল বিএনপি ও তাদের দোসর জামায়াতের হরতাল-অবরোধের নামে শত নিরীহ মানুষকে পেট্রোল বোমায় পুড়িয়ে মারা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার মিশেল বাচেলেত তার সদ্যসমাপ্ত বাংলাদেশ সফরকালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে যে কথা বলেছেন, সে প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য এই আইন। আমাদের এ আইন নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন, তাদের বলবো অস্ট্রেলিয়া, সিংগাপুরে এ আইনের দিকে তাকাতে। সেখানকার আইনে আমাদের চেয়েও কঠিন ধারা আছে। আমাদের যে ধারাগুলো নিয়ে কথা হয়, ভারত ও পাকিস্তানেও একই রকম ধারা আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফ্রেমওয়ার্ক ল’ করা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। সেটির আলোকে সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাদের আইন করেছে। সেগুলো নিয়ে তো কোনো কথা বলেন না। অনেক সময় আইন না পড়ে, না বুঝেও নানা ধরনের কথা বলা হয়। হ্যাঁ, এই আইনের যাতে কোনো অপপ্রয়োগ না হয়, সে জন্য আমরা সতর্ক আছি, কেউ যাতে নিগৃহীত না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য কুশীলব ও যারা এর পটভূমি রচনা করেছে, বাসন্তীকে জাল পরিয়ে জনগণকে উত্তেজিত করেছে, তাদের বিচার ও মুখোশ উন্মোচনের জন্য কমিশন গঠনের দাবির সাথে আমি একাত্ম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে কৃষিবিদ ও কৃষির সকল ক্ষেত্রে কর্মরতদের অনেক অবদান রয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের আয়তনের চার ভাগের একভাগ নেদারল্যান্ডসের কৃষিখাতে বার্ষিক রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা প্রায় আমাদের মোট রপ্তানির সমান। আশা করি, আমাদের কৃষিবিদরা কৃষিজমি রক্ষাসহ বহুমুখী কার্যক্রমে দেশের কৃষিখাতকে তৈরি পোশাক খাতের মতো অন্যতম প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎসে পরিণত করতে সচেষ্ট থাকবেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বক্তব্য রাখেন।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে সভায় আলোচনা করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া প্রমুখ।
