জাতীয়ভাবে পালনযোগ্য দিবসের কোনো শ্রেণিতে স্থান পায়নি শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সর্বশেষ জারি করা প্রজ্ঞাপনে মোট ৮৯টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসের উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে শহিদ বুদ্দিজীবী দিবস ১৪ ডিসেম্বর নেই।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে যেসব দিবস পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সেগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করে তিনটি ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করে। তবে ১৯৭২ সাল থেকে প্রথাগতভাবে ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতীয়ভাবে পালিত হয়ে আসছে। এছাড়াও শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এ সরকারের আমলে নির্মিত হয়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই দিবসটি সরকারি গেজেটে না থাকার বিষয়টিতে শহিদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেন শিগগিরই বুদ্ধিজীবী দিবসটি গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করে তা প্রকাশ করা হবে।
প্রসঙ্গত এটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ প্রস্তাব দেওয়ার কথা। জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গত রাতে টেলিফোনে ইত্তেফাককে বলেন, তালিকায় থাক বা না থাক দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন/পালনের বিষয়ে সরকার নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ক তালিকায় জাতীয় পর্যায়ের নিম্নলিখিত দিবস/উত্সবসমূহ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন/পালন করা হবে: এই তালিকায় ২২টি দিবসের উল্লেখ রয়েছে। উল্লেখযোগ্য দিবসগুলো হচ্ছে :শহিদ দিবস/আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, জাতির পিতার জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, গণহত্যা দিবস, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, জাতীয় শোক দিবস, জাতীয় সংবিধান দিবস, বিজয় দিবস, বাংলা নববর্ষ ইত্যাদি।
খ তালিকায় যে সকল দিবস ঐতিহ্যগতভাবে পালন করা হয়ে থাকে অথবা বর্তমান সময়ে দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণের জন্য বিশেষ সহায়ক, সে সকল দিবস উল্লেখযোগ্য কলেবরে পালন করা যেতে পারে। এ তালিকায় ৩৩টি দিবস উল্লেখ রয়েছে। এ তালিকার উল্লেখযোগ্য দিবসগুলো হচ্ছে :জাতীয় সমাজসেবা দিবস, মুজিবনগর দিবস, বিশ্ব পরিবেশ দিবস, বিশ্ব খাদ্য দিবস ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস ইত্যাদি।
গ তালিকায় বিশেষ বিশেষ খাতের প্রতীকী দিবসসমূহ সীমিত কলেবরে পালন করা হবে। এ ধরনের দিবসসমূহ নিম্নরূপ :বার্ষিক প্রশিক্ষণ দিবস, বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস, বিশ্ব মেধা দিবস, বিশ্ব হার্ট দিবস, বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ইত্যাদি।
ওপরে উল্লিখিত তিন ধরনের দিবস ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ আরও কিছু দিবস পালন করে থাকে। যা গতানুগতিক ধরনের। কোন কোন ক্ষেত্রে দিবসসমূহ পুনরাবৃত্তিমূলক বা বর্তমান সময়ে তেমন কোন গুরুত্ব বহন করে না। সরকারের সময় এবং সম্পদ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সরকারি সংস্থাসমূহ এ ধরনের দিবস পালনের সঙ্গে সম্পৃক্তি পরিহার করতে পারে।