বিশ্ব শিক্ষক দিবসে জাতীয়করণ, শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ উৎসবভাতা, ৫০ শতাংশ বাড়ি ভাড়াসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন,ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা। এছাড়াও বিগত সরকারের আমলে অবৈধভাবে চাকরি বঞ্চিত ও বরখাস্তকৃত শিক্ষকদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে পুনরায় যোগদানের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে ফেডারেশনটি।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভায় ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন ফেডারেশন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অধ্যাপক নূর নবী মানিক। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, বিগত দিনের শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয়, আদর্শ ও নৈতিক শিক্ষার একমাত্র বাধা ছিলো আওয়ামী লীগ সরকার। একজন আদর্শ শিক্ষক হতে গেলে অবশ্যই তার নীতি-নৈতিকতা ঠিক থাকতে হবে। একজন শিক্ষক যখন জাল সার্টিফিকেট তৈরির কারসাজির সাথে যুক্ত থাকেন, ভোটকেন্দ্রে ভোট চুরির সাথে যুক্ত থাকেন তখন তিনি কোনভাবেই আদর্শ শিক্ষক হতে পারেন না। শিক্ষার গুণগত মান ঠিক রাখতে একজন শিক্ষককে অবশ্যই আদর্শ শিক্ষক হতে হবে।
১০ দফা দাবি হলো,
১) শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করে বিদ্যমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্যসমূহ দূর করতে হবে।
২) জাতীয়করণ না করা পর্যন্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ উৎসবভাতা, ৫০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া বিধি অনুযায়ী চিকিৎসা ভাতাসহ সকল সুযোগ সুবিধা দিতে হবে।
৩) বিগত ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারী যাদেরকে দীর্ঘদিন যাবৎ অন্যায় ও অবৈধভাবে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত/বরখাস্ত করা হয়েছিলো তাদেরকে পুনরায় স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বহাল করতে হবে এবং তাদের প্রাপ্য বেতন-ভাতা পরিশোধের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৪) বিতাড়িত/বরখাস্তকৃত শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে যারা ইতোমধ্যে বয়সজনিত কারণে অবসর গ্রহণ করেছেন তাদেরকে ক্ষতিপূরণসহ সমুদয় পাওনা পরিশোধ করতে হবে।
৫) পতিত স্বৈরাচারী সরকার কর্তৃক গঠিত দুর্নীতিগ্রস্ত অবসর সুবিধাবোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের কমিটি অবিলম্বে বাতিল করে সৎ, যোগ্য, দক্ষ ও নৈতিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে।
৬) বিতাড়িত স্বৈরাচারী সরকারের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ দলীয় অধ্যক্ষ, উপাধ্যাক্ষ ও শিক্ষা প্রশাসনের সকল স্তরে কর্মরত দলীয় ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা এখনো পদত্যাগ করেনি অবিলম্বে তাদেরকে নির্বাহী আদেশে বহিষ্কার করতে হবে।
৭) বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের ৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর অটো সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়া, পর্যায়ক্রমে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি করতে হবে।
৮) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ন্যায় সকল পর্যায়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছর করতে হবে।
৯) কিন্ডারগার্টেন ও ইবতেদায়ি মাদরাসার নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।
১০) ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জন সমন্বয় কমিটি অবিলম্বে পুনরায় গঠন করতে হবে।