চীনের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ উত্তেজনার পর জান্তা বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী জোট। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
থান ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির (টিএনএলএ) এক নেতা জানান, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সমঝোতা হয়েছে।
দেশটির জান্তা ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। এরপর গত অক্টোবরের শেষ দিকে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করে। এমনকি বিদ্রোহী এ গোষ্ঠীটি উত্তরাঞ্চলে চীনের সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশকিছু সেনাচৈকি ও শহর দখলের দাবি করেছে। এর ফলে সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্যে বিঘ্নিত হচ্ছিল। এ ছাড়া যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে শরণার্থী পরিস্থিতি নিয়ে চীন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টিএনএলএর এক নেতার বরাতে চীনের কূটনৈতিক কর্মকর্তা ডেং জি জিন জানান, থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স সামনে আর না আগানোর শর্তে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে নিরাপত্তার জন্য তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
চুক্তি অনুযায়ী, জোট কোনো শত্রু শিবির বা শহরে আক্রমণ থেকে বিরত থাকবে। অন্যদিকে জান্তা নতুন করে বিমান হামলা, বোমাবর্ষণ বা ভারী অস্ত্রের মাধ্যমে আক্রমণ চালাবে না।
টিএনএলএর পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হলেও বিষয়টি মিয়ানমারের জান্তার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ছাড়া জোটের অপর দুই শক্তি ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং আরাকান আর্মির (এএ) পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের শান স্টেটে আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষ আবার ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। মান্দারিন ভাষাভাষী মিয়ানমারের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), থান ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মিও (টিএনএলএ) তাদের সঙ্গে মিলে জান্তার বিরুদ্ধে অপারেশন ১০২৭ পরিচালনা করছে।
দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো বেশ কয়েকটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এমনকি তারা চীনের সঙ্গে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্রও দখল করেছে। দেশটিতে ইতিহাসে অপারেশন ১০২৭ সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা। এর আগে এমন সহিংসতার সাক্ষী হয়নি দেশটি।