জাবিতে গণরুম থেকে তুলে নিয়ে ২ শিক্ষার্থীকে মারধর

জাবি প্রতিনিধি |

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হল থেকে প্রথম বর্ষের দুই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।

গতকাল শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের বি ব্লকের ৩৫১ (১/২) নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

  

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ফয়সাল মারুফ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৫০তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনায় যুক্ত ছিলেন তিনি। মারুফ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের অনুসারী বলে পরিচিত।

গতকালের মারধরের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা হলেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের (৫১তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ইমরান এবং আইন ও বিচার বিভাগের মাহবুবুল ইসলাম পিকুল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মারুফ ও রাকিব ভুক্তভোগী ইমরানকে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপে কারা রাজনীতি করতে চায় এমন একটি তালিকা দিতে বলেন। কিন্তু তিনদিন পরেও কোনো সাড়া না পাওয়ায় শুক্রবার দুপুরে তাকে ৩৫১ (১/২) নম্বর কক্ষে ডেকে নেওয়া হয়। এরপর ইমরানকে বেধড়ক মারধর করেন মারুফ। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মারুফকে ওই কক্ষে রড নিয়ে ঢুকতে দেখা যায়। ঘটনার সময় সেখান থেকে চিৎকার-চেচামেরির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, প্রাধ্যক্ষ কমিটির সদস্যরা গণরুমে গেলে তাদেরকে ভুক্তভোগীর বরাত দিয়ে এই ঘটনার বর্ণনা দেন শিক্ষার্থীরা। 

অভিযুক্ত ফয়সাল মারুফ

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মীর মশাররফ হোসেন হলের গণরুমে থাকা এক শিক্ষার্থী বলেন, ঘটনার সময় তিনি হলেই ছিলেন। মারুফ গণরুমের দরজায় লাথি মেরে ঢুকে ইমরানকে ডেকে নিয়ে যান। প্রথমে তাকে হলের ছাদে নিয়ে পেটানো হয়। পরে ৩৫১ (১/২) নম্বর রুমে নিয়ে আবারও রড দিয়ে মারধর করা হয়। মারুফ প্রায়ই কোনো কারণ ছাড়াই জুনিয়রদের চড়-থাপ্পড় ও গায়ে জুতা ছুড়ে মারেন। 

ভুক্তভোগী ইমরান বলেন, সিনিয়ররা আমাদের গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীদের নামের লিস্ট (তালিকা) করতে বলেন। কিন্তু এ কাজে দেরি হলে তারা আমাদের রুমে ডেকে নিয়ে বকাঝকা করেন। তবে আমাদের মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ভুক্তভোগী মাহবুবুল ইসলাম পিকুলও রড দিয়ে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন। এসময় হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগীরা মার খাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেও তাদের সহপাঠীরা বলছেন, ফের মারধর করা হতে পারে এমন ভয়ে ইমরান ও পিকুল বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। ৩৫১ (১/২) নম্বর কক্ষের বিছানায় একটি রড পাওয়া গেছে, যেটি দিয়ে তাদের মারধর করা হয়।

এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে মারুফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাকে হলে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলম বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, আমি হলের প্রাধ্যক্ষের ফোন পেয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে গণরুমে যাই। অভিযুক্ত কাউকেই খুঁজে পাইনি। হলের প্রাধ্যক্ষকে দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২০০ - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২০০ ‘আহতদের আমৃত্যু চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে’ - dainik shiksha ‘আহতদের আমৃত্যু চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে’ ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ ইউজিসির - dainik shiksha ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ ইউজিসির পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাবির প্রশাসনিক ভবন থেকে ‘শেখ মুজিবের’ ছবি অপসারণ - dainik shiksha জাবির প্রশাসনিক ভবন থেকে ‘শেখ মুজিবের’ ছবি অপসারণ ইএফটি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha ইএফটি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023229122161865