জাবিতে তুচ্ছ ঘটনায় বাসের হেল্পারকে আটকে রাখার অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি |

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে ঢাকা-খুলনাগামী বাসের এক হেল্পারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দিগন্ত পরিবহনের হেল্পার হানিফকে সংশ্লিষ্ট হলে প্রায় দু’ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। 

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী সজল সাহা ও অর্থনীতি বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. তানজিম সাকিব (অনিক)। তারা দু’জনেই শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী।

সজল সাহা ও অনিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর নড়াইল থেকে রাতের গাড়িতে ফিরছিলেন অনিক। এ সময় বাসের সুপারভাইজার বাসের মধ্যে মাছের একটি বাক্স উঠাচ্ছিলেন। এ সময় মাছের বাক্সের জায়গা করে দেওয়ার জন্য অনিককে বসার সিট সোজা করে বসতে বলেন সুপারভাইজার। যাত্রীবাহী গাড়িতে মাছ ওঠানোর কারণ জানতে চাওয়ায় অনিকের সঙ্গে বাসের সুপারভাইজারের কথা কাটাকাটি হয়। পরে অনিককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন সুপারভাইজার। পরবর্তীতে আজ শনিবার খুলনা যাওয়ার জন্য টিকিট কাটতে একই পরিবহনের নবীনগর কাউন্টারে যান সজল সাহা। দু’টি টিকিটের দাম ১২শ টাকার মধ্যে সজল পাঁচশ টাকা নগদ পরিশোধ করে বাকি টাকা গাড়িতে ওঠার সময় দিতে চান। এতে সজলের সঙ্গে পুনরায় বাকবিতণ্ডা হয় দিগন্ত পরিবহন অন্য একটি বাসের হেল্পারের। এ সময় তাকে জামার কলার ধরে মারধর ও হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সজল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন গেটে দিগন্ত পরিবহনের একটি বাস আটকান সজল সাহা ও তার অনুসারীরা। এ সময় বাসের হেল্পার হানিফকে আটকে রেখে বাসটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের কমন রুমের পেছনে একটি কক্ষে তাকে আটকে রাখা হয়। এ সময় বাসের হেল্পারের সঙ্গে কথা হলে তিনি একটি কক্ষে আটক আছেন বলে জানান। তবে কক্ষ নম্বর বলতে পারেননি।

খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও সংশ্লিষ্ট হলের প্রভোস্ট আ.স.ম. ফিরোজ-উল-হাসান, নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা মো. রাসেল মিয়া ও হল ছাত্রলীগের নেতারা। পরে সবার অগোচরে হলের উত্তর পাশের গেট দিয়ে হেল্পার হানিফকে বের করে দেওয়া হয়। হানিফ পৌনে চারটায় হল থেকে বের হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হলের গার্ড আবু তাহের ও নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তারা।

এ সময় দিগন্ত পরিবহনের নবীনগর ব্রাঞ্চের ম্যানেজার ফারুক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে কাউন্টারের লোকদের কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে শুনেছি। তারা আমার এক লোককে আটকে রেখে বাসটা ছেড়ে দিয়েছে। পরে আমি সেক্রেটারি ও ভার্সিটির সিকিউরিটির সঙ্গে কথা বলেছি। হানিফ এ সময় কারো ফোন ধরছিল না। পরে ৪টার দিকে তাকে ছেড়ে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমাদের আগামীকাল দুপুর ১২টায় প্রক্টর অফিসে দেখা করতে বলেছেন।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, কামালউদ্দিন হলের ছেলেরা একটা বাস আটকিয়েছে বলে জেনেছি। তাদের সঙ্গে সম্ভবত বাসের লোকদের বাকবিতণ্ডা হয়েছে। আমি তাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জানাতে বলেছি। লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বলেছি। বাস আটকানো কোনো সমাধান না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও কামালউদ্দিন হলের প্রভোস্ট আ. স. ম. ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘হলের ছাত্ররা তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের কারণে বাসের হেল্পারকে নিয়ে এসেছে। আমি এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছি। তবে তাকে পরবর্তীতে ছেড়ে দিয়েছে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0068390369415283