জাবিতে বহিরাগতকে পেটালো ছাত্রলীগ

জাবি প্রতিনিধি |

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ঘুরতে আসা এক ব্যক্তিকে মারধর করেছে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মী। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় মারধরের এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার বখতিয়ার আশরাফুল সিঙ্গাপুর প্রবাসী। মারধরের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বখতিয়ারকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘মারধরের শিকার ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়। তবে ঘটনাটি ক্যাম্পাসে ঘটেছে, তাই আমরা ওই ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।’

মারধরে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন, মার্কেটিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের সৈয়দ আফ্রিদি ও রাহাত আলম রিজভী, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের আরিফ আহমেদ, আইন ও বিচার বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের রাকিব উল ইসলাম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের আজিম সাকিব, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের নাহিদ তমাল রোমান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের সৌমিক সরকার ও ইতিহাস বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের মো. আদনান। তারা সবাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে বহিরাগত একজন মেয়ে অভিযুক্ত সৈয়দ আফ্রিদির সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় বখতিয়ারকে দেখিয়ে ওই মেয়ে হাসতে থাকেন। কথা বলার এক পর্যায়ে আফ্রিদি উত্তেজিত হয়ে মুঠোফোনে কল করে তার কয়েকজন সতীর্থ ছাত্রলীগের কর্মীকে ডাকেন। পরে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের কর্মীরা একসঙ্গে বখতিয়ারকে বেধড়ক কিলঘুষি দিতে থাকেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের উপপরিচালক সারোয়ার হোসেন ভুক্তভোগী বখতিয়ারকে তার নিজের কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানসহ নিরাপত্তা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা গেলে ছাত্রলীগের অভিযুক্ত কর্মীরা জোর করে সেই কক্ষে ঢোকেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কয়েক সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে তাদের পেটানোর হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা।

মারধরের শিকার বখতিয়ার আশরাফুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি প্রথমবারের মতো এই ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসেছি। আসার পথে সাভারের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাস থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করি। এ সময় ওই মেয়ে আমার পাশাপাশি হাঁটছিলেন। এক পর্যায়ে ওই মেয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়। পরে তার ফোন নম্বর চাই। ওই মেয়ের বয়ফ্রেন্ড আছে এবং তিনি আমাকে ফোন নম্বর দিতে পারবেন না বলে জানান। পরে তার কাছ থেকে হাসিমুখে বিদায় নিয়ে আমি ক্যাম্পাসে ঘুরতে থাকি। হঠাৎ করে কয়েক ছেলে এসে আমাকে মারধর করে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ আফ্রিদি বলেন, ‘আমার এক বান্ধবী সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ফটকে নেমে হেঁটে ক্যাম্পাসের দিকে আসছিলেন। ওই সময় থেকেই বহিরাগত ওই ছেলে (আশরাফুল বখতিয়ার) আমার বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। বিষয়টি আমার বান্ধবী আমাকে জানায়। পরে আমরা ওই ছেলেকে উত্ত্যক্ত করার কারণ জিজ্ঞেস করি। এক পর্যায়ে উপস্থিত সবাই তাকে মারধর করে।’

আশুলিয়া থানার ওসি কামরুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজনকে আমাদের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তির অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029160976409912