জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ২৯৪ কোটি ১৬ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। শনিবার (২৪ জুন) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে অনুষ্ঠিত ৪০ তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে এই বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের সভাপতিত্বে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার এ বছরের বাজেট উপস্থাপন করেন।
গবেষণা ও উদ্ভাবন ব্যয় বাবদ ৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা গত বাজেটের তুলনায় এক কোটি ১০ লাখ টাকা বেশি। তবে এই খাতে মোট বাজেটের দুই শতাংশেরও কম (১.৮৮%) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ৪২ লাখ টাকা। এ খাতে বরাদ্দ গতবছরের চেয়ে দুই লাখ টাকা বৃদ্ধি পেলেও মোট বাজেটের শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ অপরিবর্তিত রয়েছে।
এবারের বাজেটে সর্বোচ্চ ব্যয় হিসেবে বেতন ভাতা খাতে ১৭৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা মোট বাজেটের ৫৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। গতবছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১৬৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
পন্য ও সেবা (সাধারণ আনুষঙ্গিক) খাতে ৫৬ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা হ্রাস করা হলেও, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ খাত হিসেবে এই খাতে ১৯ দশমিক ০৫ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া পন্য ও সেবা (রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত) খাতে ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এবছরের বাজেটে তৃতীয় সর্বোচ্চ খাত হিসেবে পেনশন ও অবসর সুবিধা বাবদ ৪২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা (১৪.৩৯%) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া এই অর্থবছরে অন্যান্য ব্যয় বাবদ ৪ কোটি ১৮ লাখ (১.৪২%), যন্ত্রপাতি খাতের ব্যয় ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা (১.২১%), যানবাহন ক্রয় বাবদ ব্যয় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা (০.৫১%), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যয় ৫৫ লাখ টাকা (০.১৯%) ও অন্যান্য মূলধন জাতীয় ব্যয় ৫০ লক্ষ টাকা (০.১৭%) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এবারের বাজেটে মোট আয়ের সিংহভাগ আসবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (বিমক) থেকে প্রদত্ত ২৭১ কোটি ৮১ লাখ টাকার অনুদান। ছাত্রছাত্রীদের নিকট হতে প্রাপ্ত ফিস থেকে ৪ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার, ভর্তি ফরম বিক্রি বাবদ আয় ১২ কোটি ৮৬ লাখ ৩০ হাজার, বিভিন্ন চার্জসমূহ কর্তন থেকে তিন কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি থেকে ২৩ লাখ এবং অন্যান্য সূত্র হতে ১ কোটি ১৭ লাখ ২৯ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছে।
২০২০-২০২১ সন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রমপুঞ্জিভূত ঘাটতির পরিমান ছিল ৪২ কোটি ৯০ লাখ ১৭ হাজার টাকা। ২০২১-২০২২ সনের ঘাটতি তিন কোটি এক লাখ ৫৩ হাজার টাকাসহ ২০২১-২০২২ সনের ক্রমপুঞ্জিত ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ কোটি ৯১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। উক্ত ঘাটতির টাকা বিভিন্ন অর্থ বছরে বিভিন্ন তহবিল হতে রাজস্ব তহবিলে ধার গ্রহণ করে যোগান দেয়া হয়েছে।
এছাড়া, ২০২২-২৩ সালের সংশোধিত বাজেটে সমাবর্তন খাতের ছয় কোটি ৮৮ লাখ টাকা আয় দেখানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০২১-২২ অর্থবছরের মূল বরাদ্দ ছিল ২৭৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা এবং সংশোধিত বরাদ্দ ছিল ২৮৭ কোটি এক লাখ টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার মূল বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫ কোটি ৩ লাখ টাকা।