জামিলুর রেজা চৌধুরীর নামে বুয়েটের ভবনের নামকরণ হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নামে একটি একাডেমিক ভবনের নামকরণ করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৫২৩তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সিন্ডিকেটের ৫২৩তম সভায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল ভবনের নাম ‘ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী পুরকৌশল ভবন’ নামে নামকরণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।”

অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বাংলাদেশের প্রকৌশল জগতে সবার পরিচিত নাম। একাধারে তিনি গবেষক, শিক্ষাবিদ, প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানী ছিলেন। তাঁর জন্ম ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে, সিলেটে। তাঁর বাবা আর ভাইসহ পরিবারের অনেক সদস্যই প্রকৌশলী ছিলেন। বড় হয়ে তাঁর বাবা ও ভাইদের মতো তিনিও বেছে নেন এই পেশা।

স্বাধীনতার পর এ দেশে যত বড় বড় ভৌত অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, তার প্রায় প্রতিটির সঙ্গেই অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী কোনো না কোনোভাবে জড়িত ছিলেন। যুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে। হাত দেন পদ্মা সেতু নির্মাণের বিশাল কর্মযজ্ঞে।

গত বছরের ২৮ এপ্রিল ৭৭ বছর বয়সে মারা যান বাংলাদেশের অগ্রগণ্য এই প্রকৌশলী। এর আগে একুশে পদক পাওয়া এই শিক্ষককে সরকার ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।

ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তখনকার আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ)। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক শেষ করে সেখানেই শিক্ষকতা শুরু করেন।

১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যান জামিলুর রেজা চৌধুরী। সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডভান্স স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর করেন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে সেখানেই পিএইচডি শেষ করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘শিয়ার ওয়াল অ্যান্ড স্ট্রাকচারাল অ্যানালাইসিস অব হাইরাইজ বিল্ডিং’।

পিএইচডি শেষে দেশে ফিরে আবার বুয়েটে শিক্ষকতা শুরু করেন জামিলুর রেজা চৌধুরী। পদোন্নতির ধারায় ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দেহন অধ্যাপক।

২০০১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বুয়েটে অধ্যাপনা করার সময় বিভিন্ন সময়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান এবং ফ্যাকাল্টির ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ থেকে ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বুয়েটের কম্পিউটার সেন্টারের পরিচালক ছিলেন তিনি। পরে ওই কম্পিউটার সেন্টারই বুয়েটের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনলজিতে পরিণত হয়। 

বুয়েট থেকে অবসরে যাওয়ার পর ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, সেই দায়িত্বে তিনি ছিলেন ২০১০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। এরপর ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য হিসেবে তিনি কাজ শুরু করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033080577850342