বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে দুই শিক্ষক জাল সনদ দিয়ে চাকরি করছেন। তারা হলেন, পাথরঘাটা উপজেলার সৈয়দ ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজের শিরিন আক্তার ও হাতেমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মো. রুহুল আমিন। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কোষাগার থেকে এমপিও বাবদ অবৈধ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে তাদের বিরুদ্ধে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব (অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শাখা) মো. সেলিম শিকদার স্বাক্ষরিত এক আদেশে বিষয়টি জানা গেছে।
জানা যায়, পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের সৈয়দ ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শিরিন আক্তার ও হাতেমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ধর্ম শিক্ষক মো. রুহুল আমিনসহ সারাদেশে ৬৭৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর সনদ জাল বলে শনাক্ত হয়েছে। যা গত ৮ ফেব্রুয়ারি সনদ প্রদানকারী দপ্তর প্রধান-প্রতিনিধি সমন্বয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সনদের সত্যতা যাচাই করে ৬৭৮ জনের জাল সনদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে পাথরঘাটার মো. রুহুল আমিন ও শিরিন আক্তার রয়েছেন।
এদিকে জাল সনদধারী শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও বন্ধ এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে চাকরিচ্যুত করা এবং অবৈধভাবে গ্রহণ করা বেতন ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা করার আদেশ দেয়া হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে। এছাড়াও যারা অবসরে গেছেন তাদের অবসরের সুবিধা প্রাপ্তি বাতিল করা ও যারা স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছেন তাদের আপত্তির টাকা অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে আদায় করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জাল সনদধারী শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ভাতা-কল্যাণ ট্রাস্ট্রের ভাতা বন্ধের প্রয়োজনীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তালিকা অনুযায়ী জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক ফৌজদারী অপরাধের মামলা দায়ের এবং জাল সনদধারীদের নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আদেশ দেয়া হয়েছে।
জাল সনদধারী হাতেমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্ম শিক্ষক রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মাওলা মিলন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপর জাল সনদধারী শিক্ষকা শিরিন আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকেও পাওয়া যায়নি।
বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জালাল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে আগে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক শিক্ষক নিয়োগ দিতেন। হয়তো তখন তারা তাদের মতো করে নিয়োগ দিয়েছেন। বর্তমান সময়ে এনটিআরসিএ এর মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয় তাই এরকম করা সম্ভব হয় না।