এমপিওভুক্তির জন্য ভুয়া বা জাল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ-নিবন্ধন সনদ প্রদান, নিয়োগ সংক্রান্ত ভুয়া-জাল রেকর্ড প্রদান এবং প্যাটার্ন বহির্ভূত পদে এমপিও ভুক্তির জন্য আবেদন প্রেরণ করলে প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতাদি স্থগিত-বাতিল করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ শূন্য ঘোষণাসহ তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালার ১৮ ধারার ১(ঙ) উপধারায় এমন বিধানের কথা থাকলেও তা মানছেন না সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আর এম মোবাশ্বেরুল হক।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে চার শিক্ষককে জাল সনদে চাকরিতে সহায়তা করার। জাল সনদ প্রমাণিত হওয়া প্রভাষকদের এমপিও বাতিল হলেও স্বপদে বহাল রয়েছেন অধ্যক্ষ হক।
এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে, সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ। কেনো তিনি এখনো স্বপদে বহাল- এনিয়ে অভিযোগ দিলেও অজানা কারণে দীর্ঘদিনেও তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে কলেজ শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ।
এদিকে জাল সনদে চাকরি করার অভিযুক্তরা হলেন, উপাধ্যক্ষ মো. ওবায়দুল্লাহ, প্রভাষক বাসুদেব সিংহ, মো. নাজমুল হক, ও গ্রন্থগারিক রহিমা খাতুন।
শিক্ষকদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা বিষয়ক শাখা ওই চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জনবল কাঠামো, এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর ১৮ এর ১ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়।
তারই প্রেক্ষিতে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ফেব্রুয়ারি ব্যাখ্যা ও মতামত ও এমপিও কেনো বাতিল করা হবে না বলে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় মাউশি অধিদপ্তর।
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসের এমপিও শিটে এই কলেজের অভিযুক্ত চার শিক্ষকের নাম কর্তন করা হয়। কিন্তু ১৮ এর ১ এর (ঙ) ধারায় এমপিওভুক্তির জন্য ভুয়া-জাল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ-নিবন্ধন সনদ প্রদান, নিয়োগ সংক্রান্ত ভুয়া-জাল রেকর্ড প্রদান এবং প্যাটার্ন বহির্ভূত পদে এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন পাঠালে প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা স্থগিত-বাতিল করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা-পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ শূন্য ঘোষণাসহ তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিন্তু অধ্যক্ষ ও সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণ হওয়া সত্বেও অধ্যক্ষের বেতন বাতিল করা হয়নি এবং সভাপতির পদও শুন্য হয়নি এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এই শিক্ষকরা এইচএসসি পরীক্ষার ডিউটিসহ কলেজের যাবতীয় কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে।
এই কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. ওবায়দুল্লাহ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক বাসুদেব সিংহ, গ্রন্থগারিক রহিমা খাতুন ও ভূগোল প্রভাষক নাজমুল হকের নেয়া বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার আদেশ হওয়া উচিত বলে মনে করেন তারই সহকর্মীরা।
এ ব্যাপারে মাউশি অধিদপ্তরের কলেজ শাখার সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাস বলেন, ডিজি স্যারের নির্দেশ ছাড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব নয়।
তবে কলেজেটির বিভিন্ন অভিযোগের আবেদন আজও পর্যন্ত কোনো তদন্তের মুখ দেখেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। যার ফলে আতঙ্কিত অধ্যক্ষের নিপীড়নে ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ মোবাশ্বেরুল হক বলেন, বিষয়টি কোর্টে আছে। কোর্ট আমাকে যে নির্দেশনা দিয়েছে সে অনুযায়ী আমি কাজ করছি। কোর্টের নির্দেশ তো আমাকে পালন করতে হবে।