নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় জাল সনদ দিয়ে নিজের ছেলেকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। নিয়োগের ছয় বছর পর সেই শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করেন প্রধান শিক্ষক ছেলে। দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে নীলফামারীর জলঢাকার দক্ষিণ সিদ্ধেশ্বরী বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ অবৈধ নিয়োগের তথ্য উঠে আসার পর বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
বিষয়টি নিয়ে ১৮ ডিসেম্বর দৈনিক শিক্ষাডটকম এবং ২০ ডিসেম্বর দৈনিক আমাদের বার্তা পত্রিকায় ‘জাল সনদে সভাপতির ছেলেকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ’ শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকশিত হয়। এরপর টনক নড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনের। বিষয়টি তদন্ত করতে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
গতকাল বুধবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার স্বাক্ষরিত এক আদেশে, দুই উপজেলার দুজন সহকারী শিক্ষা অফিসারকে এ তদন্ত কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, জাল সনদে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি তদন্তের জন্য ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে উপজেলার ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় দক্ষিণ সিদ্ধেশ্বরী বানিয়াপাড়া বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠিত করেন একই এলাকার বাসিন্দা উকিল চন্দ্র রায়। সে বছরের ১৪ নভেম্বর একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় ওই স্কুলের ১ জন প্রধান শিক্ষক এবং ৩ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। সে সময় দুই পদে মোট ১৭ জন আবেদন করেছিলেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক পদে ন্যূনতম ডিগ্রি পাস থাকার ছিলো। কিন্তু নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ডিগ্রি পাসের একটি জাল সনদে ছেলে কাঞ্চন কুমার রায়কে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ নভেম্বর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির তৎকালীন সভাপতি উকিল চন্দ্র রায়। চাকরিতে যোগদানের পর তৎকালীন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার সুলতানা রাজিয়া সত্যায়িত কাঞ্চন কুমার রায়ের জমা দেয়া ডিগ্রি পাসের সনদটির আইডি নাম্বার যাচাই করে দেখা গেছে, প্রকৃতপক্ষে সেই ডিগ্রি পাসের সনদটি বিকাশ চন্দ্র রায় নামে এক ব্যক্তির। পরবর্তীতে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই জলঢাকা উপজেলায় ৩৫টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারি ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ হয়। গেজেট প্রকাশের পরবর্তী সময়ে শিক্ষকদের নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই বাছাইকালে নিজের ডিগ্রি পাস সনদ না থাকায় একটি জাল সনদ দাখিল করেন কাঞ্চন কুমার রায়।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।