ঢাকা সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজজাল সনদেই অধ্যক্ষ, লাখ লাখ টাকা তছরুপ

মিথিলা মুক্তা |

১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন তিনি। প্রায় চার বছর আগে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যক্ষের পদেও। কিন্তু তার সনদ জাল। জাল সনদে দীর্ঘ ২৬ বছর শিক্ষকতার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হয়েছে। শুধু জাল সনদে চাকরিই নয়, এমপিওভুক্ত হয়ে ১৯ বছরে সরকারের ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। দৈনিক শিক্ষাডটকম-এর অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। 

জানা যায়, রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার ঢাকা সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে কর্মরত মাহবুবুল হক ভূঞা।  তিনি ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ওই প্রতিষ্ঠানেই কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।

প্রতিষ্ঠান সূত্র বলছে, মাহবুবুল হক ভূঞা ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে এমপিওভুক্ত হয়েছিলেন। পরে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে কিছু সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে ওই বছরের শেষ দিকে নিয়মিত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। তবে নিয়োগের সময় জমা দেয়া কম্পিউটার সনদটি নিয়ে আগের কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ তুললে তা ওই বছরই জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষক ও গবেষণা একাডেমিতে (নেকটার) যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। 

তবে তার সনদটি জাল বলে গত ১১ সেপ্টেম্বর যাচাই প্রতিবেদন পাঠিয়েছে নেকটার। নেকটারের উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মুহাম্মদ মাহমুদুর রহমান স্বাক্ষরিত যাচাই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাহবুবুল হক ভূঞার (পিতা : মো. ফিরোজ উদ্দিন, সনদ ও রেজি নং ১৫৩০) সনদটি জাল। নেকটার বা সাবেক নট্রামস সনদটি ইস্যু করেনি।

প্রতিষ্ঠানটির একজন সাবেক শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তা বলেন, তিনি জাল সনদে এমপিওভুক্ত হয়ে ২০০৪ থেকে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। 

এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে অধ্যক্ষ মাহবুবুল হক ভূঞার সঙ্গে দৈনিক আমাদের বার্তার পক্ষ থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। জাল সনদের চাকরি নিয়ে এমপিওর টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে আবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। 

জানা গেছে, মাহবুবুল হক ভূঞার কম্পিউটার বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার সময় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ছিলেন ড. মো. জহিরুল ইসলাম সিকদার। জানতে

চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলাম। তখন কলেজটি ছিলো ননএমপিও। তখন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তিনি আবেদন করে নির্বাচিত হলে সনদ আলাদা করে যাচাই করা হয়নি। পরে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে আমি অবসরে যাওয়ার আগে তার সনদটি যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিলো। তার প্রতিবেদনের অনুলিপি আমার কাছেও এসেছে। এতে জানানো হয়েছে তার সনদটি ভুয়া।

এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে ঢাকা সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল হক সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই - dainik shiksha একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন - dainik shiksha সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ - dainik shiksha শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল - dainik shiksha শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044078826904297