চাঁদা না পেয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাতিকে ষড়যন্ত্র করে জেলে দেওয়ার প্রতিবাদে রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব খান ও পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করে শাস্তির দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে ষড়যন্ত্রের শিকার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা করম আলীর নাতি মো. রাসেলের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও তার মুক্তির দাবি জানানো হয়।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টায় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কাটাখালী পৌরসভা শাখার আয়োজনে প্রথম মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। পরে বিকেলে একই দাবিতে পবা উপজেলার বায়া বাজার ও বাগমারা উপজেলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের বাগমারা উপজেলা ও জেলা শাখা।কাটাখালীর মানববন্ধন থেকে বক্তারা বলেন, রাজশাহীর পুঠিয়ায় শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা করম আলীর নাতি মো. রাসেলের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে তাকে নির্যাতন করে জেলে পাঠায় জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব খান। বক্তারা বলেন, পুঠিয়ার শহীদ করম আলীর মতো বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও জীবনের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতিকে নির্যাতন করে জেলে পাঠানো হয়েছে। এটা দেশের কোন বিবেকবান মানুষই মেনে নেবে না।
তারা বলেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নির্যাতনকারিদের কখনোই ছাড় দেওয়া যাবে না। এসময় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, নির্যাতনকারী রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব খান ও পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে বহিস্কার ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য রাসেলের মামলা প্রত্যাহার করে তাকে মুক্তি দিতে হবে।
এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের পবা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নাফিউল নেহাল, কাটাখালী পৌর শাখার সভাপতি ওয়ালি আহমেদ নয়ন, সাধারণ সম্পাদক সাগর আলী, উপদেষ্টা তারিক জামিল প্রমূখ।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে একই দাবিতে রাজশাহী জেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ পবা উপজেলার বায়া বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। এতে নেতৃত্ব দেন রাজশাহী জেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি ওসমান গণি লাভলু, সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ বাঁধন প্রমুখ।
একই দাবিতে বিকেলে বাগমারা উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এতে নেতৃত্ব দেন বাগমারা উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি মেহেদী হাসান শুভ ও সাধারণ সম্পাদক সাগর মোহাম্মদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, পুঠিয়ার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা করম আলীর নাতি মো. রাসেল স্ত্রীর দেনমোহর নিয়ে মামলায় পড়লে তার মামলা সমঝোতার দায়িত্ব নেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব ও পুঠিয়া থানা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। রাসেল দেন মোহরের দুই লাখ টাকা পরিশোধ করলেও সমঝোতা করার বিনিময়ে হাবিব ও জাহাঙ্গীরের দাবিকৃত ৬০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে পারেননি। রাসেলের পরিবারের অভিযোগ, একারণে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে রাসেলকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করে গভীর রাতে পুলিশে ধরিয়ে দেয় হাবিব। এঘটনায় হাবিব নিজেই বাদী হয়ে রাসেলের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা ও চুরির চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে কারাগারে রয়েছেন রাসেল।