ঝালকাঠি সদর উপজেলার সুগন্ধিয়া হাট সংলগ্ন আবাসনে ১৮৭টি হতদরিদ্র পরিবারকে সরকারি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু আবাসন প্রকল্প এলাকার আশপাশে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। আবাসনের শিশুদের জন্য নেই বিশেষ কোনো শিক্ষা ব্যবস্থাও। তাই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিতই থাকছেন ১৮৭টি পরিবারের শিশুরা।
জানা গেছে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়নের
সুগন্ধিয়া হাট সংলগ্ন কালিজিরা নদীর পাড়ে আবাসন প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়।
প্রত্যেকটি ঘরের অনুকূলে দলিল সম্পাদনসহ সুবিধাভোগীদের হস্তান্তর করা হয়েছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী প্রত্যেকটি ঘরের জন্যই যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিপত্তি হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝালকাঠি ও বরিশাল জেলার সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত কালিজিরা নদীর বিপরীত পাড়ে বরিশাল সদর এলাকার কড়াপুর এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও তার দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার। সুগন্ধিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব ৩ কিলোমিটারেরও বেশি।
এদিকে আবাসনের প্রতিটি পরিবারেই ২/৩জন শিশু রয়েছে। সবমিলিয়ে পাঁচ শতাধিক শিশুর বাস এই আবাসনে।
আবাসন প্রকল্পের প্রবীণ বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন সরদার ক্ষোভ প্রকাশ করে দৈনিক আমাদের বলেন, এখানে কোনো স্কুল-মাদরাসা না থাকায় প্রকল্পের শিশুরা নিরক্ষরই রয়ে গেলো।
প্রকল্পে বসবাসকারী কালাম হাওলাদার, আব্দুল বারেক বেপারীসহ একাধিক বাসিন্দারা জানান, তিন কিলোমিটার দূরে হওয়ায় শিশুরা স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। ফলে অধিকাংশ শিশু এখানে নিরক্ষর।
আবাসন প্রকল্পের আরেক বাসিন্দা মোঃ আবুল কাসেম সরদার বলেন, এখানকার শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না। বাবা-মায়ের সঙ্গে কাজে যায়।
বিষয়টি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, ঝালকাঠি সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মোজাম্মেল হক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সুগন্ধিয়া আবাসন প্রকল্পে ভূমিহীন ও হতদরিদ্র ১৮৭টি পরিবারকে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আবাসন এলাকা বা তার কাছাকাছি কোন স্কুল নেই। যা আছে তার দূরত্বও অনেক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা বা বরাদ্দ এলে যথাযথ বাস্তবায়ন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, সুগন্ধিয়া আবাসনের খুব কাছাকাছি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাই। আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলবো।