আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আগ্রহী পর্যটকদের নিয়ে নিখোঁজ হওয়া সাবমেরিন বা ডুবোযান টাইটানের বিস্ফোরণে আরোহীদের নিহত হওয়া প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্ববিখ্যাত টাইটানিক চলচ্চিত্রের পরিচালক জেমস ক্যামেরন। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, ‘যা ঘটেছে, আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। যখন সাবমেরিনটির ইলেকট্রনিক্স ব্যর্থ হয়েছে, যোগাযোগ ব্যর্থ হয়েছে এবং একই সঙ্গে ট্র্যাকিং ট্রান্সপন্ডার ব্যর্থ হয়েছে, তার মানে সাবমেরিনটি আর নেই।’
সিনেমা বানানোর সুবাদে বিষয়টি ভাল করে বুঝতে ৩৩ বার মহাসাগরের তলদেশে গিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখে এসেছেন ক্যামেরন। টাইটানে থাকা পাঁচ যাত্রী নিখোঁজের বেলায় কয়েকদিন আগেই তিনি সবার মৃত্যু হতে যাচ্ছে বলে ধারণার কথা জানিয়েছিলেন।
জেমস ক্যামেরন জানান, রোববার তিনি একটি নৌজাহাজে ছিলেন। টাইটান নিখোঁজ হওয়ার কথা সোমবার পর্যন্ত তিনি জানতে পারেননি। পরে যখন তিনি জানতে পারলেন যে, ডুবোযানটি যোগাযোগ ও তার নিজের গতিপথ দুটোই হারিয়ে ফেলেছে, তখনই ধারণা করেছিলেন এরই মধ্যে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে গেছে।
বিবিসিকে জেমস ক্যামেরন বলেন, ‘মনে হয়েছে, দীর্ঘ দুঃস্বপ্নের সময়ের মতো, যেখানে মানুষজন ছোটাছুটি করছে আর চিৎকার করে অক্সিজেন এবং এইসব নিয়ে শুধু কথা বলে যাচ্ছে।’
ক্যামেরন বলেন, ‘আমি জানতাম সাবমেরিনটি চূড়ান্ত গভীরতা ও অবস্থানের নিচে গিয়ে ঠেকেছিল। ঠিক সেই জায়গায়ই ওটাকে পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার যখন রিমোট কন্ট্রোলড ডুবোযান মোতায়েন করা হলো, উদ্ধার অভিযানে নিযুক্তরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কিংবা সম্ভবত কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেটি পেয়ে গেল।’
আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের পাশেই পাওয়া গেছে সাবমেরিনের টাইটানের ধ্বংসস্তূপ। চার দিন মহাসাগরের তলদেশে ব্যাপক তল্লাশির পর গতকাল বৃহস্পতিবার উদ্ধারকারীরা ডুবোযানটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে বলে জানান। বৃহস্পতিবার প্রথম টাইটানের মালিকানা প্রতিষ্ঠান ওশানগেট এক্সপেডিশন্সের পক্ষ থেকে পাঁচ আরোহীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়। প্রথমে ‘ভয়ংকর বিস্ফোরণে’ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র কোস্ট গার্ড। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা রিয়ার এডমিরাল জন মাগার বলেন, “ধ্বংসস্তূপের যে চিত্র পাওয়া গেছে তা ‘বিপর্যকর বিস্ফোরণের’ সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।”