বকেয়া টাকা চাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা এক রেস্তোরাঁ মালিককে পিটিয়ে জখম করেছেন। স্যার এ এফ রহমান হলের এক্সটেনশন বিল্ডিং হিসেবে পরিচিত।
বুধবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। রেস্তোরাঁ মালিকের এক আত্মীয় ৯৯৯-এ ফোন দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল টিমের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়।
রেস্তোরাঁ মালিকের নাম নেয়ামতউল্লাহ। রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার আইয়ুব কলোনিতে 'রাইস কিং' — নামে রেস্তোরাঁ চালান তিনি। গত ১৩ জুন রেস্তোঁরাটি উদ্বোধন করা হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নেয়ামতউল্লাহ বলেন, ‘শাহনেওয়াজ হলের ছাত্ররা বাকি খেয়ে চলে যায়, টাকা চাইলে বিকাশ থেকে তুলে দিবে বলে আর দেয় না। আজ এক ছাত্র আমার হোটেলে খাওয়ার পর বিকাশ থেকে টাকা তুলে এনে দিবে বললে, আমি বলি, আমাকে সেন্ড মানি করেন। বিল হিসেবে ৯০ টাকা সেন্ড মানি করে চলে সে যায়। কিছুক্ষণ পর ছাত্ররা এসে আমাকে হলের ভেতর নিয়ে যায়। এর আগে দোকানের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। আমাকে হলে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি, হকিস্টিক দিয়ে মারধর করে। পরে একটি রুমে নিয়ে ২০/২৫ জন মিলে কিলঘুষি মারে। আমি তিনবার অজ্ঞান হয়ে যাই। তারা একাধিকজন আমার মুখে প্রস্রাবও করে।’
ভুক্তভোগী রেস্তোরাঁ মালিক আরও বলেন, ‘আমি ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী। আমি এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিব। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’
যারা মারধর করেছে তাদের চিনতে পেরেছেন কি না জানতে চাইলে নেয়ামতউল্লাহ বলেন, ‘আমি কাউকে চিনি না। তারা বিভিন্ন সময় আশপাশের দোকানগুলোতে চাঁদা তোলে, চাঁদা দিতে না চাইলে মারধর করে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সন্ধ্যায় রেস্তোঁরায় বাকি খেতে যাওয়া শিক্ষার্থীর নাম তাওহিদুল ইসলাম। তিনি গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাওহিদকে ফোনকল করে এই প্রতিবেদক পরিচয় দিলে কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই' বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ শাহনেওয়াজ ছাত্রাবাসের ওয়ার্ডেন আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, ওই হোটেল মালিক নাকি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। আজকে এক শিক্ষার্থীকে কলার ধরে শার্ট ছিঁড়ে ফেলছে বলে ছাত্ররা জানায়। শিক্ষার্থীরা তো এভাবে মারধর করতে পারে না, এটার সুন্দর পদ্ধতি আছে। তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বললে কিংবা তাকে শোধরানোর সুযোগ দেওয়া দরকার ছিল। খারাপ আচরণের বিষয়টি আমাদের জানালে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হত।’
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন ওয়ার্ডেন।