নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় টাকা দিয়ে চাকরি বিক্রি করেছেন এমন এক ডজনের বেশি ব্যাক্তি কারাগারে রয়েছেন। কিন্তু এবার এই প্রথম অর্থ দিয়ে যারা চাকরি কিনেছেন তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ঘুষ নেয়া যেমন অপরাধ, তেমনি ঘুষ দেয়াও সমান অপরাধ। গত সোমবার টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়া চার শিক্ষক সমন পেয়ে আদালতে হাজির হয়েছিলেন। আদালতে আত্মসমর্পণের পর চার শিক্ষকের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক।
এরপর আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরা সকলেই মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা। আলিপুর নগর দায়রা আদালতের বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায় এই বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
২১ আগস্ট পর্যন্ত তাঁদের প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রাখা হবে। ওই দিনই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। জানা গেছে, আদালতে সিবিআইয়ের দেয়া চার্জশিটে এ চারজনের নাম রয়েছে।
এদিকে মাসখানেক আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ওই চার শিক্ষককে সমন পাঠিয়েছিলো আলিপুর নগর দায়রা আদালত। এদের নাম জহিরুদ্দিন শেখ, সাইগল হোসেন, সিমর হোসেন এবং সৌগত মন্ডল। তদন্তকারীরা চার্জশিটে জানান, তাপস মন্ডলের মাধ্যমে এরা অর্থ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। সোমবার ওই চারজন আদালতে হাজির হন। অভিযুক্তরা হাজিরা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের আইনজীবীরা আগাম জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক তা খারিজ করে দেন।
তিনি বলেন, কেন এদের জামিন দেয়া হবে? এদের জন্য এতো কিছু। বিচারক বলেন, ‘সিবিআই তো ক্লিনচিট দিয়েই দিয়েছিলো। আমি ডেকে এনেছি। পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ওঁদের ডাকা হয়েছে। তিনি ওই প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশ্ন করেন, আপনাদেরই বলতে হবে কেনো আপনাদের জামিন দেয়া হবে। বিচারক আরো বলেন, আপনাদের কাছে কেউ নিশ্চয়ই টাকা চাইতে যায়নি। আপনারা টাকা নিয়ে গিয়েছেন।
সিবিআইকে এই চার শিক্ষক তথ্য দিয়ে সহায়তা করায় চার্জশিটে এদের সাক্ষী হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিলো। কিন্তু বিচাপতি এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। আইনজীবীদের একাংশ অনেক দিন ধরেই যারা ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি করেছিলেন। তাই এই চার জন শিক্ষকের গ্রেফতারের পর আরো চাকরি কেনা শিক্ষকদের গ্রেফতার করা হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
অভিযুক্ত চার শিক্ষক কে কতো টাকা দিয়েছিলেন সেই তথ্যও সামনে এসেছে। সিবিআই সুত্রের খবর, সৌগত মন্ডল ৫ লাখ ৫০ হাজার রুপি দিয়েছিলেন তাপস মন্ডল নামের এক ব্যাক্তিকে; সাইগল হোসেন দিয়েছিলেন ৬ লাখ রুপি, সিমর হোসেন দিয়েছিলেন ৫ লাখ রুপি এবং জহিরুদ্দিন শেখ দিয়েছিলেন ৫ লাখ ৫০ হাজার রুপি।