টাকা নিয়ে সাজানো নিয়োগ পরীক্ষা

রুমি আক্তার পলি, টাঙ্গাইল |

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ছমির উদ্দিন পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী পদে চূড়ান্ত প্রার্থীর বদলে সাজানো প্রার্থী দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার আয়োজন চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের একজন দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, ১৭ লাখ টাকার বিনিময়ে মিজান নামে একজনকে ল্যাব সহকারী পদের জন্য চুড়ান্ত প্রার্থী করে সাজানো নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আর বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাকের আহমেদকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চূড়ান্ত প্রার্থী করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এর আগেও গত মার্চ মাসে তিনটি পদে--অফিস সহায়ক, নৈশ্য প্রহরী এবং আয়া নিয়োগেও সাজানো পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ আছে। ওই নিয়োগ পরীক্ষার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সবাই জানতে পারবে এমন কোনো ভালো মানের জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়নি। 

এ বিষয়ে আয়া পদের প্রার্থী হতে ইচ্ছুক উত্তর ধলাপাড়ার শাহিনা আক্তার এবং গানজানার রোমেছা বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এই পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ছিলেন। অনেক দিন ধরে খোঁজখবর করছিলেন। হঠাৎ জানতে পারেন, নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই কথা বলেছেন অফিস সহায়ক হিসেবে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক পেঁচার আটা এলাকার টিটু। এ ছাড়া নৈশ প্রহরী হিসেবে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ছিলেন গাংগাইর, ধলাপাড়া, সহড়াবাড়ী ও বড় মেধার এলাকায় অনেকেই।

দৈনিক আমাদের বার্তার হাতে একটি কল রেকর্ড এসেছে। তা থেকে জানা যাচ্ছে,  এই বিদ্যালয়ে ল্যাব সহকারী ও প্রধান শিক্ষক দুটি পদে সাজানো নিয়োগ পরীক্ষা জন্য তারিখ ছাড়া রেজুলেশন তৈরি করা হয়েছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ল্যাব সহকারী পদের জন্য রেজুলেশন তৈরি করা হয় এবং এর আগে প্রধান শিক্ষক পদের জন্য রেজুলেশন তৈরি করা হয়। এই রেজুলেশনগুলো বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাকের আহমেদ তৈরি করেছেন। 

ধলাপাড়ার কুসারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল বিএসসির পরামর্শে এমনটা করা হয়েছে বলে জানা গেছে কল রেকর্ডে। 

এই বিদ্যালয়ে কর্মরত আরেকজনের কল রেকর্ড দৈনিক আমাদের বার্তার হাতে এসেছে। তা থেকে জানা গেছে,  সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাকের আহমেদ আলোচনা করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে একদিনে তারিখ ছাড়া সবগুলো রেজুলেশন পাস করানোর। 

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলামকে জানানো হলে দৈনিক আমাদের বার্তাকে তিনি বলেন, আমি এই বিষয়টি জানি না। তবে তাদের ডেকে জানতে চাইবো। পরের দিন তিনি জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাকের আহমেদকে ডেকেছিলাম। তাদের জানিয়ে দিয়েছি যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় দেয়ার আগে আমাকে জানাবেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, কোনো ধরনের রেজুলেশন তৈরি করা হয়নি। 

কিন্তু, উপজেলা শিক্ষা অফিসার রেজুলেশনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাহলে এখন কেনো অস্বীকার করছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এ বিষয়ে নিউজ না করার অনুরোধ করেন।

এ বিষয়ে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বিদ্যালয়ের সভাপতি রফিকুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। 

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য - dainik shiksha ১৮ দিনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি : উপাচার্য উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত - dainik shiksha উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদের ছাত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম স্থগিত যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052411556243896