দৈনিক শিক্ষাডটকম, নেত্রকোনা: নেত্রকোনার মদন উপজেলার বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির মেয়াদ শেষ হবে ২৫ মে। নতুন পরিচালনা কমিটির নির্বাচন ৫ মে। তবে প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে বর্তমান কমিটি বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর ও আয়া পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এখন মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে পদ দুটি পূরণের পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। টাকার ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের ফোনালাপের একটি ক্যাসেট সংযুক্ত করে ইউএনওর দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন এক চাকরিপ্রার্থীর স্বামী। বিষয়টি তদন্তে মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রথমে ২ এপ্রিল তাড়াহুড়া করে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা গোপন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ১৭ এপ্রিল সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে আবেদনের সময় ১৫ দিনের স্থলে ১০ দিন দেওয়া হয়। তড়িঘড়ি করে টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। নিয়োগ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের টাকা লেনদেনের ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়েছে।
আয়া পদে চাকরিপ্রার্থীর স্বামী বিপুল মিয়া নিয়োগ বাণিজ্যের টাকার ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের ফোনালাপের একটি ক্যাসেট সংযুক্ত করে ইউএনওর দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তবে প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘অভিযোগকারী বিপুল মিয়ার শাশুড়ি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নারী সদস্য। বিপুল আমাকে ফোন করে বলেন, নিয়োগের বিষয়ে তাঁর শাশুড়ির স্বাক্ষর নিয়ে টাকা কেন দিলাম না? আসলে সেটা ছিল মিটিংয়ের বিষয়ে স্বাক্ষর। আমি তখন তাঁকে নিয়মকানুন বুঝিয়েছি। এখনও নিয়োগের কোনো কিছুই হয়নি। জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও ডিজির প্রতিনিধির উপস্থিতিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। টাকা লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল হক স্বপন বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমি চাই, আমার শেষ পর্যায়ে কোনো বদনাম যেন না আসে। সেই লক্ষ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বচ্ছ নিয়োগ দিতে চাই। এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল বারী জানান, নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে একটি অভিযোগ তদন্ত করতে রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন তিনি। এতে মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন তিনি ও একাডেমিক সুপারভাইজার। অচিরেই তদন্ত শুরু হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ আলম মিয়ার ভাষ্য, বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।