টাকার বিনিময়ে বিনামূল্যের বই বিতরণের অভিযোগ

দৈনিকশিক্ষাডটকম, গোপালঞ্জ |

দৈনিকশিক্ষাডটকম, গোপালঞ্জ : গোপালঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় সরকারের দেয়া বিনামূল্যের বই বিতরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বই উৎসবের দিনে যারা টাকা দিতে পারেনি তাদের বই দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন কয়েকজন অভিভাবক। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ৫২ নম্বর সিতাইকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

রশিদ বই ছাপিয়ে বছরের প্রথম দিনে বই উৎসবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শ্রেণিভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে আদায় করেছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন হাওলাদার। শুধু তাই নয়- এই প্রধান শিক্ষক রশিদ বই ছাপিয়ে উপজেলার ৫২ নম্বর সিতাইকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা ও পঞ্চম শ্রেণির বিদায়ী শিক্ষার্থীদের প্রত্যয়নপত্রের জন্য ২০০ টাকা করে আদায় করেন।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

তৃতীয় শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বই উৎসবের দিনে যারা টাকা দিয়েছে, শুধু তারাই নতুন বই পেয়েছে। আগে থেকেই হেড স্যার টাকা আনার কথা বলেছিলেন। হেড স্যার বই দেয়ার সময় তাদের কাছ থেকে ১২০ টাকা করে নিয়েছেন।

দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।

সিতাইকুণ্ড গ্রামের কুলসুম বেগম বলেন, ‘আমার নাতনি রুকাইয়াকে শিশু শ্রেণিতে ভর্তি করেছি। এর জন্য ভর্তি ফি বাবদ আমাকে ৫০ টাকা দিতে হয়েছে।’

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক অভিভাবক বলেন, ‘বই উৎসবের দিনে টাকা না দিতে পারায় আমার ছেলেকে বই দেয়া হয়নি। আমি মঙ্গলাবার ১২০ টাকা দিয়ে আমার ছেলের জন্য বই নিয়ে এসেছি। এ জন্য প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন হাওলাদার আমাকে একটি রশিদও দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘আমি ম্যানেজিং কমিটির নির্দেশে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই টাকা নিয়েছি।’

৫২ নম্বর সিতাইকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রশিদ হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য বই বিতরণের সময় শ্রেণিভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভর্তি ও অন্যান্য খাতে যে টাকা নেয়া হয় তা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়।’

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, বই বিতরণ, ভর্তি বা অন্য কোনো বিষয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টাকা নেয়ার বিধান নেই। ৫২নং সিতাইকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন হাওলাদার যদি টাকা নিয়ে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053989887237549