যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত বাংলাদেশ বিষয়ক অনুষ্ঠিত সম্মেলন শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৮এপ্রিল) শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে আমেরিকান ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশ স্টাডিজ (এআইবিএস)। সম্মেলনটির সহ-আয়োজক ছিল অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউট (এসএআই)।
আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ (এআইবিএস) এবং টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের (এসএআই) যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশবিষয়ক কনফারেন্স ১৮ ও ১৯ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়, অস্টিনে অনুষ্ঠিত হয়। এই একাডেমিক সম্মেলনে ১৪টি প্যানেলের সমন্বয়ে বাংলাদেশবিষয়ক ৫৪টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়, যা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিষয় বিশ্লেষণ করেছে। সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭০ জনেরও অধিক স্কলার অংশগ্রহণ করেন।
এআইবিএসের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে অধ্যাপক রীয়াজ গবেষকদের মধ্যে একাডেমিক আদান-প্রদান এবং নেটওয়ার্ক তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এ ধরণের আলোচনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে একাডেমিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে।
এসএআইয়ের পরিচালক ড. সৈয়দ আকবর হায়দার বাংলাদেশের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক সমসাময়িক সমস্যাসমূহ মোকাবিলার জন্যে এমন গবেষণাধর্মী কাজের সঙ্গে এসএআইয়ের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরেন।
উদ্বোধনী দিনে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ড. দীনা সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি, বার্কলের প্রফেসর ইলোরা শেহাবুদ্দিন এবং জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটির প্রফেসর সৈয়দ ফেরদৌসের মূল বক্তব্য তুলে ধরেন। তারা ‘দ্য ফিউচার ডিরেকশনস অফ বাংলাদেশ স্টাডিজ’ শীর্ষক একটি অধিবেশনে বাংলাদেশ স্টাডিজের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা দিক-নির্দেশনা তুলে ধরেন।
সম্মেলনে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের গণহত্যা, রোহিঙ্গা সঙ্কট, মানবাধিকার, পরিবেশ, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটসহ সন্ত্রাসবাদ নিয়ে গবেষণাধর্মী নানান আলোচনা হয় এবং বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা উঠে আসে।
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাঈম মোহাইমেন এবং ক্লার্ক ইউনিভার্সিটির মোহাম্মদ সাজ্জাদুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী ইতিহাস এবং এর বৈশ্বিক মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে গবেষণাধর্মী আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ স্টাডিজের অগ্রগতির জন্য নিবেদিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একমাত্র কনসোর্টিয়াম এআইবিএস আয়োজিত এই সম্মেলনটি শুধুমাত্র স্কলার বক্তৃতাই সহজ করেনি বরং বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের গতিশীল ভূমিকাকে বোঝার এবং তার সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য একাডেমিক সম্প্রদায়ের প্রতিশ্রুতিকেও লালন করছে।
এছাড়াও সম্মেলনে লিঙ্গ, সামাজিক গতিশীলতা এবং মানবাধিকার বিষয়ে তুলনামূলক আলোচনা তুলে ধরা হয়। অন্যান্য মূল থিমগুলোতে ডিজিটাল মিডিয়া এবং রাজনৈতিক ব্যস্ততা স্থান পায়। এসব প্ল্যাটফর্ম কীভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য এবং অংশগ্রহণকে প্রভাবিত করে তা যাচাই করে।
সম্মেলনে বিচারিক নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদের মামলা পরিচালনা, সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ এবং পাণ্ডিত্যপূর্ণ বিতর্কের জন্য একটি পরিবেশ তৈরির অধ্যয়নসহ প্রশাসন এবং আইনি দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে সম্বোধন করা হয়।
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাঈম মোহাইমেন এবং ক্লার্ক ইউনিভার্সিটির মোহাম্মদ সাজ্জাদুর রহমানের যৌথ উপস্থাপনায় ‘১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের পর বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি আকর্ষণীয় সেশনের মাধ্যমে সম্মেলনটি শেষ হয়।