ট্রেনে ছোড়া ঢিলে চোখ হারাতে বসেছেন চাকরিপ্রত্যাশী তরুণ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

চাকরির পরীক্ষা দিতে ঢাকা এসেছিলেন মো. রাকিবুল ইসলাম (২৭)। নাটোরের বাগাতিপাড়া থেকে ট্রেনে চড়েছিলেন তিনি, বসেন জানালার পাশে।

বিমানবন্দর স্টেশনে ট্রেনটি থামার সময় কে বা কারা সেটিতে ঢিল ছোঁড়ে। সেটি আঘাত করে রাকিবুলের চোখে। তিনি এখন আগারগাঁও জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জানা গেছে, গতকাল বুধবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নাটোর থেকে আসা পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে বসা রাকিবুল ঢিলের শিকার হন।  

ঘটনাটি শুনে হাসপাতালে গিয়ে রাকিবুলের সঙ্গে কথা বলে গণমাধ্যমকর্মী। তিনি জানান, বুধবার রাতে পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে ঢোকে। যাত্রীরা সে সময় নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বাইরে থেকে আসা একটি ঢিল তার ডান চোখে আঘাত করে। তিনি জ্ঞান হারিয়ে ট্রেনের ফ্লোরে পড়ে যান।

কিছুক্ষণ পর তার জ্ঞান আসে। জানতে পারেন ট্রেনের গার্ডরা বরফ ও ব্যান্ডেজ এনে তার চোখ বেধে দেন। এ সময় তাকে বিমানবন্দর স্টেশনের জিএম দেখতে যান। ট্রেনটি পরে কমলাপুর স্টেশনে আসে। সেখানে রেলওয়ে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে রাকিবুলকে রেলওয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় তার চোখ থেকে রক্তক্ষরণ হয়নি। পরে তার চোখ থেকে বরফ ও ব্যান্ডেজ সরান দায়িত্বরত চিকিৎসক। এরপর থেকে রাকিবুল চোখে সব ধূসর দেখতে থাকেন। বিষয়টি চিকিৎসকদের জানানো হলে তারা রাকিবুলকে উন্নত চিকিৎসার আগারগাঁও জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে রেফার করে দেন।

নাটোরের বাগাতিপাড়া থেকে সমবায় অধিদপ্তরে চাকরির পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন রাকিবুল। কমলাপুর স্টেশনে নেমে তার যাওয়ার কথা ছিল ধানমন্ডিতে এক ছোট ভাইয়ের বাসায়। সেখান থেকেই চাকরির পরীক্ষা দিতে যাওয়ার কথা ছিল তার। আগামীকাল শুক্রবার (১৯ মে) সমবায় অধিদপ্তরে চাকরির পরীক্ষায় বসার কথা ছিল তার।

রাকিবুল জানান, তার কাছে তেমন টাকা পয়সা নেই। ফিরতি ট্রেনের টিকিট কাটা আছে শুধু। এখন আমি আর পরীক্ষা দিতে পারব না। তারা বাবা একজন কৃষক, দুই ভাইবোনের মধ্যে তিনিই বড়। চাকরির পরীক্ষা নিয়ে অনেক আশা ছিল তার।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাকিবুলের ডান চোখের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ হয়েছে। বেশি রক্তক্ষরণ হলে অপারেশন করতে হবে। কম হলে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলবে। এখনই তারা অস্ত্রোপচারের কথা ভাবছেন না। ওষুধেই চিকিৎসা চলছে। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সকাল ১০টার পর থেকে তার চোখে ড্রপ দেওয়া হচ্ছে, তিনি ওষুধ সেবন করছেন। রাকিবুল জানিয়েছেন, বিকেলের পর থেকে তিনি আবছা দেখছেন। আগামী শনিবার (২০ মে) চিকিৎসকদের বৈঠক হবে। সেখানে রাকিবুলের চোখের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)‌ ফেরদাউস আহ‌মেদ বলেন, ঘটনাটির পর পুলিশই নিজ তাগিদে তদন্ত করছে। আইনি ব্যবস্থা চলমান। কে বা কারা ঢিল ছুঁড়েছে, তাদের খোঁজা হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা - dainik shiksha শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি - dainik shiksha ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - dainik shiksha ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00313401222229