ঠিকাদারের দখলে কলেজ ভবন, পাঠদান বন্ধ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি |

কলেজের ভবন ও মাঠ দখলে নিয়ে দুই বছর ধরে বসবাস করছেন ঠিকাদারের লোকজন। এ কারণে স্নাতকের পাঠদান বন্ধ। অভিযোগ রয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের যোগসাজশেই মাঠসহ স্নাতক ভবনটি দখলে নিয়েছেন ঠিকাদার। অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ করলেই শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধমকি  ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন অধ্যক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনা মদন উপজেলার সরকারি হাজী আবদুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজে।

জানা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় মদন সরকারি হাজী আবদুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজের দুটি একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। ৭ কোটি ৮৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ছয়তলা একটি ভবনের নির্মাণকাজ করছে মেসার্স তামান্না এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। দেড় বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। এ ছাড়া ৬ কোটি ৬৯ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ব্যয়ে আরেকটি ছয়তলা ভবনের নির্মাণকাজ করছে দেওয়ান আলী আকবর নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ১ মার্চ দ্বিতীয় ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা।

গত বৃহস্পতিবার সরকারি হাজী আবদুল আজিজ খান ডিগ্রি কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, দুটি ভবনের নির্মাণকাজ চলমান। কলেজের পুরো মাঠ ঠিকাদারের দখলে। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে নির্মাণসামগ্রী। স্নাতকের একাডেমিক ভবনটিতে বসবাস করছেন ঠিকাদারের লোকজন। কয়েকটি শ্রেণিকক্ষে রড, সিমেন্টসহ জিনিসপত্র রাখা। একটি শ্রেণিকক্ষে চলছে রান্নাবান্না। তিনতলা ভবনটির পুরোটাই ঠিকাদারের দখলে।

 

স্নাতকের শিক্ষার্থী আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা স্নাতকের প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করলাম। কিন্তু এক দিনও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান হয়নি। কারণ দুই বছরের বেশি সময় ধরে স্নাতকের ভবনটি ঠিকাদারের দখলে। এ নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই স্নাতকের শিক্ষার্থীরা কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ভবনটি দখলমুক্ত করে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।’ একই ধরনের কথা বলেন শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ ও পিপলু খান।

কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কায়েস আকন্দের ভাষ্য, কলেজে অনিয়মের শেষ নেই। প্রতিবাদ করলেই হুমকি-ধমকি দিয়ে কলেজে আসতে নিষেধ করেন অধ্যক্ষ। এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন। কিছুদিন আগে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রেশন ফি নেওয়ার প্রতিবাদ করায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়কের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলা ঠুঁকে দেন তিনি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তামান্না এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি পলাশ মিয়া বলেন, ‘আমার লোকজন ভবনে বসবাস করছেন এটা সত্য। কিন্তু আমরা তো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেই থাকছি। এ বিষয়ে আমাদের কিছু না বলে পিন্সিপালের (অধ্যক্ষ) সঙ্গে কথা বলেন।’

অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে। তাঁর দাবি, স্নাতক ভবনে ঠিকাদারের লোকজন বসবাস করছেন। তাদের ডাকা হয়েছিল। তারা বলেছেন, ছাদ ঢালাই শেষ হলেই স্নাতক ভবনটি ছেড়ে দেবেন। কলেজের মাঠ দখলের বিষয়ে তিনি বলেন, ঠিকাদারের লোকজনকে বলবেন মাঠ যেন দ্রুত পরিষ্কার করে দেন তারা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! জাল সনদে চাকরি, লাইব্রেরিয়ানকে তলব - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি, লাইব্রেরিয়ানকে তলব শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ - dainik shiksha শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ - dainik shiksha প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048811435699463