ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা উচিত : ন্যাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে বাতিল করা উচিত বলে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামি পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। ন্যাপের দাবি, এ আইনের অপপ্রয়োগের ফলে গত কয়েকবছর ধরে এই নাগরিকরা গ্রেফতার ও হয়রানির শিকার হয়েছে। তাই আইনটিকে গণমাধ্যম-কর্মীদের কাজের সুযোগ সংকুচিত করার লক্ষ্যে প্রণীত ও নিবর্তনমূলক দাবি করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে ন্যাপ।

বুধবার (১৬ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ দাবি জানান। 

তারা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই মামলা হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি এই আইনটি তৈরি হয়েছে শুধু ভিন্নমত দমনের জন্যই ? প্রশ্ন উঠেছে স্বাধীন সাংবাদিকতায় এই আইনটি কতটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে? এই আইনের খুব বেশি অপপ্রয়োগ চলছে। এই ধরনের আইনগুলো সাধারনত করাই হয়, ক্ষমতাবানদের স্বার্থরক্ষার জন্য। করোনায় সময় এই আইনের অপব্যবহারটা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।’ 

নেতারা বলেন, দেশের অধিকাংশই মনে করেন এই আইন করে স্বাধীন মত প্রকাশের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। এই আইনের ভয়ে মানুষ এখন সত্য কথা বলতে বা লিখতে ভয় পাচ্ছেন। যে আইন মানুষের সত্য কথা বলার পথ রুদ্ধ করে সেই আইনটি তো অবশ্যই জনস্বার্থ বিরোধী। বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, যখনই কোন বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হয় সেটা মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করার জন্যই করা হয়েছে। এই আইনটা যেভাবে আছে সেটা ক্ষমতাসীনরা তাদের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার জন্য এবং সব ধরনের ভিন্নমত নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এই আইনটি করা হয়েছে।

তারা বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও দলনিরপেক্ষ গণমাধ্যম আধুনিক রাষ্ট্র কাঠামো এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। ক্ষমতার রাজনীতিতে ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি-অপকর্মের বিরুদ্ধে স্বাধীন সাংবাদিকতা এক বড় প্রতিবন্ধক। গণমাধ্যমের উপর নানাভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা প্রায় অসম্ভব হওয়ায় সরকার এখন একটি ভীতিকর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আশ্রয় নিচ্ছে। বিতর্কিত আইসিটি আইনের সাতান্ন ধারায় ইতোমধ্যে শত শত মামলা হয়েছে এবং এসব মামলার বেশীরভাগই মূলত রাজনৈতিক কর্মী ও সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে। 

নেতারা আরও বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা, মুক্ত গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার সাংবিধানিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা লঙ্ঘন করে মানুষের কণ্ঠরোধের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে সকলকে মতপার্থক্য ঘুচিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মে দাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে এটি শুধু মুক্ত গণমাধ্যম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংবাদিক ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে নাগরিক নিরাপত্তা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, আইনের শাসন ও সভ্য দুনিয়ায় জাতির আত্মপরিচয়ের স্বার্থ। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মুক্ত গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় নতুন প্রজন্মকে এমন একটি বিপরিত অবস্থানে ঠেলে দেবেন, তা প্রত্যাশিত নয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044188499450684