নিখোঁজ থাকা কলেজ ছাত্রী ইয়াশা মৃধা সুকন্যাকে (১৮) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে চ্যানেল ২৪ এর টকশো শেষে সুকন্যাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ডিবি। সে সময় লাইভ সম্প্রচারে ছিল চ্যানেল ২৪।
রিপোর্টার জুমাতুল বিদা সম্প্রচারের সময় দাবি করেন, 'সুকন্যার মা অপহরণের মামলা করেছেন তাই চ্যানেল২৪ এর মধ্যস্থতায় আইনি ফরমালিটিজের জন্য ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।'
এ ব্যাপারে ডিবি রমনা বিভাগের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সালাউদ্দিন বলেন, রাত দেড়টার দিকে চ্যানেল ২৪ এর সহায়তায় সুকন্যাকে হেফাজতে নিয়ে ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।
এর আগে দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর মঙ্গলবার সকালে সুকন্যার একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করে চ্যানেল ২৪।
সেখানে সুকন্যা দাবি করেন, তার মা সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। রাজি না হওয়ায় তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাতেন। দূরসম্পর্কের মামার হয়রানির শিকারও হয়েছন। অসংখ্যবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অবশেষে ঘর ছেড়েছেন। প্রেমিককে বিয়ে করে সংসার করছেন। মায়ের কাছে আর ফিরতে চান না তিনি। মাকে অনুরোধ করেছেন নিখোঁজের ঘটনায় করা অপহরণ মামলা তুলে নিয়ে, তার নিরপরাধ বন্ধু ইশতিয়াককে মুক্ত করার ব্যবস্থা করতে।
এদিকে, রাজধানীর দক্ষিণ মুগদাপাড়ার বাসিন্দা সুকন্যার মা নাজমা ইসলাম লাকী তার বিরুদ্ধে মেয়ের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।
তিনি মঙ্গলবার বিকেলে জানিয়েছেন, সুকন্যার এসব বক্তব্যে তিনি হতভম্ব। কেন সে এসব কথা বলেছে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। মেয়েকে দেড় লাখ টাকার মোবাইল ফোন, এক লাখ টাকার দুটি ট্যাব কিনে দিয়েছেন। সেগুলো বাসাতেই পড়ে আছে। তাহলে সাড়ে তিন লাখ টাকায় কেন বিক্রি করতে চাইবেন? এমন পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো মূল্যে মেয়ে সুকন্যাকে ফিরে পেতে চান।
মেয়ের বিয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যদি ছেলে ভালো হয় তবে বিয়ে মেনে নেব।’
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৩ জুন কলেজে মডেল টেস্ট দিতে গিয়ে নিখোঁজ হন সুকন্যা। পরদিন রমনা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার মা। মায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরদিন সুকন্যার কথিত প্রেমিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইশতিয়াক আহম্মেদ চিশতী এবং তার বন্ধু শেখ সালমানকে আটক করে পুলিশ। পরে ২৫ জুন রমনা মডেল থানায় সুকন্যার মা লাকীর মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাদেরকে। সালমান জামিনে মুক্তি পেলেও এখনো কারাগারে আছেন ইশতিয়াক। মেয়ের সন্ধান চেয়ে ২০ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলন করেন লাকী।